নতুন ধরনের এক ভবিষ্যৎ বলার পদ্ধতির খবর সম্প্রতি বেশ সাড়া ফেলেছে, যেখানে পনিরের (cheese) মাধ্যমে ভাগ্য গণনা করা হয়। পশ্চিমা বিশ্বে ‘টাইরোম্যান্সি’ (tyromancy) নামে পরিচিত এই পদ্ধতি এখন অনেকেরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
টাইরোম্যান্সি আসলে কী? এটি হলো এক ধরনের ভবিষ্যৎ বলার কৌশল, যেখানে পনিরের আকার, গঠন এবং চিহ্নের বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা হয়।
ধারণা করা হয়, প্রাচীন গ্রিসে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে এর উদ্ভব। মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের কৃষকরা তাদের বিবাহ, সন্তান লাভ ও শস্য ফলনের মতো বিষয়গুলো জানতে এই পদ্ধতির সাহায্য নিত।
তারা পনিরের গায়ে নাম খোদাই করে তার ভেতরের শিরা ও ছাঁচের বিন্যাস বিশ্লেষণ করত। পরবর্তীতে ১৯২০-এর দশকে ট্যারো কার্ডের জনপ্রিয়তার সাথে এর পুনরায় প্রচলন হয়।
বর্তমানে আধুনিক যুগে এসে এই পদ্ধতি নতুন করে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
ঐতিহ্যগতভাবে রাশিফল বা জ্যোতিষশাস্ত্রের ধারণাগুলোর সঙ্গে এর কিছু পার্থক্য রয়েছে। জ্যোতিষশাস্ত্র একটি সুপ্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি, যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।
অন্যদিকে, টাইরোম্যান্সি মূলত পনিরে দৃশ্যমান চিত্রগুলোর ব্যাখ্যা এবং তার আকারের উপর নির্ভরশীল। জ্যোতিষশাস্ত্র জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে, তবে টাইরোম্যান্সি সাধারণত সেই মুহূর্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরে।
এই পদ্ধতিতে ভবিষ্যৎ বলার জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বিভিন্ন ধরনের পনির ব্যবহার করেন। পনিরের প্রকারভেদে এর বিশ্লেষণও ভিন্ন হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, নরম পনির বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে, আর শক্ত পনির ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো নির্দেশ করে।
এই ভবিষ্যৎ বলার পদ্ধতি নিয়ে সম্প্রতি একটি অভিজ্ঞতা জানা যায়। যেখানে একজন ব্যক্তি তার দুটি পনিরের ছবি পাঠিয়েছিলেন এবং তার ভিত্তিতে একজন টাইরোম্যান্সার তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু ধারণা দেন।
সেই বিশ্লেষণে ব্যক্তির সম্পর্ক, আবেগ এবং ভবিষ্যতের কিছু সম্ভাবনা উঠে আসে। জানা যায়, এই ভবিষ্যৎ গণনা বেশ নির্ভুল ছিল এবং বর্তমানে ঘটে চলা অনেক ঘটনার সঙ্গে তা মিলে যায়।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন ধরনের ভবিষ্যৎ বলার পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে, যেমন হস্তরেখা বিচার, রাশিফল ইত্যাদি। টাইরোম্যান্সি, অর্থাৎ পনিরের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বলার এই অভিনব পদ্ধতিটি পশ্চিমা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এবং এটি কৌতূহলীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
তথ্যসূত্র: পিপল