লস অ্যাঞ্জেলেস শহর, যেখানে হলিউডের ঝলমলে আলো এবং বিশ্ববিখ্যাত বেসবল দল লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের খ্যাতি— সেই শহরেই এখন অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। সম্প্রতি, ডজার্স কর্তৃপক্ষের নীরবতা এবং ফেডারেল এজেন্সিদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এই ঘটনাগুলো লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি বৃহৎ অংশের মানুষের মধ্যে গভীর ক্ষোভ তৈরি করেছে।
ডজার্স, যারা একসময় এই শহরের গর্ব ছিল, এখন তাদের অনেক ভক্তের কাছে সমালোচিত হচ্ছে। এর কারণ, অভিবাসন ইস্যুতে তাদের ‘নীরব’ থাকা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন অভিবাসন নীতি কঠোর করে, তখন লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রতিবাদ শুরু হয়। অনেকেই ডজার্স কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিবাসন ইস্যু নিয়ে একটি স্পষ্ট অবস্থান আশা করেছিলেন, কিন্তু তেমনটা ঘটেনি।
লস অ্যাঞ্জেলেসের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, ডজার্স কর্তৃপক্ষের এই নীরবতা তাদের প্রতি অবিচার। তারা চান, তাদের প্রিয় দল এই বিষয়ে তাদের সমর্থন দিক।
ভক্তদের মধ্যে একজন, আমান্ডা কারেরা, ডজার্স কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, “আমরা সবসময় তাদের সমর্থন করি, তাহলে তারা কেন আমাদের সমর্থন করবে না?”
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ফেডারেল এজেন্টদের ডজার্স স্টেডিয়ামের কাছে দেখা যায়। এরপরেই এই ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।
ডজার্স কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ফেডারেল এজেন্টদের স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে দেয়নি।
তবে, সরকারি সূত্রগুলো বলছে অন্য কথা। তাদের মতে, কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (CBP)-এর কিছু গাড়ি স্টেডিয়ামের পার্কিং লটে ছিল, কিন্তু এর সঙ্গে কোনো বিশেষ অভিযানের সম্পর্ক নেই।
ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি অপ্রত্যাশিত দিক। নেজা নামের একজন শিল্পী অভিযোগ করেছেন, ডজার্সের একজন কর্মচারী তাকে একটি খেলার আগে স্প্যানিশ ভাষায় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে নিষেধ করেছিলেন।
এই ঘটনা ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দেয়।
ডজার্সের এই নীরবতা এবং বিতর্কিত ঘটনাগুলো তাদের অনেক ভক্তের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকে এখন দলের প্রতি তাদের আস্থা হারাচ্ছেন।
তারা মনে করছেন, ডজার্স কর্তৃপক্ষ হয়তো তাদের ভক্তদের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে না।
ডজার্সের এমন আচরণ নিয়ে বিতর্ক চলতেই আছে। দলটির পক্ষ থেকে অভিবাসন ইস্যুতে সাহায্য করার পরিকল্পনা করা হলেও, অনেক ভক্তের মনে এখন প্রশ্ন জেগেছে—ডজার্স কর্তৃপক্ষের আসল উদ্দেশ্য কী?
তারা কি সত্যিই অভিবাসীদের পাশে আছে, নাকি এটি নিছক লোক দেখানো?
তথ্যসূত্র: CNN