প্রকাশ্যে আসার অভিজ্ঞতা: র‍্যাপিনোর মুখেই গোপন কথা!

মেগান র‍্যাপিনো, বিশ্ব ফুটবলে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি খেলোয়াড় হিসেবে যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন, তেমনই পরিচিতি পেয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং সামাজিক সচেতনতা নিয়ে।

সম্প্রতি তাঁর আত্মজীবনী ‘ওয়ান লাইফ’ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি তাঁর জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন, যা পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এই বইটিতে র‍্যাপিনো তাঁর আত্ম-উপলব্ধি, খেলার জগৎ এবং সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার রিডিং-এ বেড়ে ওঠা র‍্যাপিনো, কলেজ জীবনেই বুঝতে পারেন তাঁর সমকামী পরিচয়।

তাঁর ভাষায়, “আমি কি তবে এত দিন গে ছিলাম, আর কেউ আমাকে সে কথা বলেনি?” এই উপলব্ধির পরেই তিনি তাঁর যমজ বোন র‍্যাচেলের সঙ্গে নিজের এই পরিচয় ভাগ করে নেন।

‘ওয়ান লাইফ’ মূলত র‍্যাপিনোর জীবনের সেই সময়গুলোর কথা বলে, যখন তিনি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন।

তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরুতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহিলা জাতীয় দলে খেলার সময়, সতীর্থ অ্যাবি ওয়াম্বাচের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

যদিও তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা ছিল, কিন্তু র‍্যাপিনো মনে করতেন, অ্যাবি ছিলেন তাঁর থেকে বয়সে বড় এবং অনেক বেশি দায়িত্ববান।

এই সম্পর্কের টানাপোড়েন একসময় তাঁদের বিচ্ছেদের কারণ হয়।

২০১২ সালে র‍্যাপিনো প্রকাশ্যে তাঁর সমকামী পরিচয় দেন।

তিনি লক্ষ্য করেন, তাঁর দলের অনেক খেলোয়াড়ই তাঁদের সম্পর্কের কথা সরাসরি বলতে স্বচ্ছন্দ নন, যেন একটা ‘কিছু বলো না, কিছু শোনো না’-এর পরিবেশ বিদ্যমান।

র‍্যাপিনো এই মানসিকতা ভাঙতে চেয়েছিলেন, যা ক্রীড়া জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে।

তাঁর এই পদক্ষেপ অন্যদেরও তাঁদের সত্য প্রকাশ করতে উৎসাহিত করেছে।

র‍্যাপিনোর জীবনসঙ্গী সু বার্ড, যিনি বাস্কেটবলে একজন চ্যাম্পিয়ন, তাঁর সঙ্গে র‍্যাপিনোর সাক্ষাৎ হয় রিও অলিম্পিকে।

তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে এবং র‍্যাপিনোর অনুপ্রেরণায় সু বার্ড ২০১৭ সালে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করেন।

র‍্যাপিনো এবং সু বার্ড একসঙ্গে ‘এ টাচ মোর’ নামে একটি পডকাস্টও শুরু করেছেন, যেখানে তাঁরা তাঁদের জীবন এবং খেলাধুলা বিষয়ক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

‘ওয়ান লাইফ’ বইটিতে র‍্যাপিনো শুধু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গল্প বলেননি, বরং খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর সংগ্রাম, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং নিজের পরিচয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার বার্তা দিয়েছেন।

তাঁর এই আত্মজীবনী বর্তমানে বইপ্রেমীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এবং পাঠকদের মধ্যে নতুন করে আত্ম-অনুসন্ধানের আগ্রহ তৈরি করেছে।

তথ্যসূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *