যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরে স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন! আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফোরথ অফ জুলাই’ উৎসবের কেন্দ্র: ব্রিস্টল, রোড আইল্যান্ডে স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহর, ব্রিস্টল, রোড আইল্যান্ড। এখানে প্রতি বছর বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস। এটি শুধু একটি সাধারণ উদযাপন নয়, বরং আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো এবং দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের স্থান হিসেবে সুপরিচিত।

এই উৎসব প্রতি বছর কয়েক সপ্তাহ ধরে চলে এবং এর মূল আকর্ষণ হলো ৪ঠা জুলাইয়ের বিশাল শোভাযাত্রা।

ঐতিহ্যপূর্ণ এই উৎসবের শুরুটা হয় ১৪ই জুন, ‘ফ্লাগ ডে’ উদযাপনের মাধ্যমে। এর পরে পুরো মাস জুড়েই চলে নানা আয়োজন। উন্মুক্ত কনসার্ট, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, যেমন – কমলা বাক্স দৌড় (Orange Crate Derby races), স্থানীয় সুন্দরী প্রতিযোগিতা, আতশবাজি ও বিশেষ গালা নৈশভোজের মতো নানা অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে শহরবাসী।

এই উৎসবগুলোর চূড়ান্ত পরিণতি হয় ৪ঠা জুলাই তারিখে, যেখানে কয়েক লক্ষ দর্শকের সমাগম ঘটে।

ঐতিহাসিক এই শোভাযাত্রা ১৭৮৫ সাল থেকে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় ২.৫ মাইল দীর্ঘ এই শোভাযাত্রা শহরের প্রধান রাস্তাগুলো দিয়ে যায়।

রাস্তার মাঝে লাল, সাদা ও নীল রঙ দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের আবহ তৈরি করা হয়। এখানে মার্চিং ব্যান্ড, বিভিন্ন স্কুলের ড্রাম দল, সুন্দর সাজানো ফ্ল্যাট এবং ‘মিস ফোরথ অফ জুলাই’ ও ‘লিটল মিস’-এর মতো প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করে।

এই দিনে শহরের প্রতিটি মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের এক অসাধারণ চিত্র ফুটে ওঠে, যা দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।

ব্রিস্টলের এই উৎসব শুধু স্বাধীনতা দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। গ্রীষ্মের পুরো সময় জুড়েই এখানে পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে।

ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে মাউন্ট হোপ ফার্ম (Mount Hope Farm) ও লিন্ডেন প্লেস (Linden Place)-এর মতো জায়গাগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও, এখানকার উপসাগরের তীরে প্রায়ই লাইভ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্রিস্টলের পুরনো স্থাপত্য, শান্ত সমুদ্রের দৃশ্য এবং আমেরিকান সংস্কৃতির এক ঝলক – সব মিলিয়ে এটি বছর জুড়েই ভ্রমণের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।

পর্যটকদের জন্য এখানে থাকার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। ব্র্যাডফোর্ড-ডাইমন্ড-নরিস হাউস (Bradford-Dimond-Norris House)-এর মতো ঐতিহ্যপূর্ণ গেস্ট হাউসগুলোতে থাকার সুযোগ আছে।

এছাড়াও, নিউপোর্ট অথবা প্রভাইডেন্সের মতো কাছাকাছি শহরগুলোতেও থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই শহরগুলো থেকে ফেরি করে সহজে ব্রিস্টলে আসা যায়।

যদি কেউ ব্রিস্টলে যান, তাহলে সেখানকার স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। এখানকার ব্রিস্টল সানসেট ক্যাফে (Bristol Sunset Café)-এর বড় আকারের সিনামন রোল এবং হোপ ডাইনারের ব্লুবেরি মাফিন খুবই জনপ্রিয়।

দুপুরের খাবারের জন্য, হালকা খাবারের জন্য বেছে নিতে পারেন ‘দ্য বিহাইভ ক্যাফে’ (The Beehive Café)। সি-ফুড পছন্দ হলে, ব্রিস্টল অয়েস্টার বার (Bristol Oyster Bar)-এর ঝিনুক অথবা কুইটো’স রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার (Quito’s Restaurant and Bar)-এর লবস্টার রোল-এর স্বাদ নিতে পারেন।

ব্রিস্টলের স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি আমেরিকার সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আসা পর্যটকদের জন্য এটি একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *