উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অংশে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এবং তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যে একটি টর্নেডোর আঘাতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
একইসঙ্গে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে তীব্র গরমের কারণে কয়েক কোটি মানুষ হিট অ্যালার্টের আওতায় রয়েছেন।
শুক্রবার রাতে, ফোরগো শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এন্ডারলিন শহরের আশেপাশে টর্নেডোর আঘাতে দুজন পুরুষ ও একজন নারীর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই এলাকার হাজার হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
গ্র্যান্ড ফর্কস-এর ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (NWS) জানিয়েছে, টর্নেডোর কারণে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ফলেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
আবহাওয়াবিদরা এখনো ঝড়ের তীব্রতা এবং বাতাসের গতিবেগ নির্ণয়ের চেষ্টা করছেন।
নর্থ ডাকোটার গভর্নর কেলি আর্মস্ট্রং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, স্পিরিটউড-এর কাছে দ্বিতীয় একটি টর্নেডো আঘাত হেনেছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, প্রতিবেশী রাজ্য মিনেসোটায়ও শক্তিশালী বাতাস বয়ে গেছে।
সেখানের বেমিজি আঞ্চলিক বিমানবন্দরে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭১ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
বেমিজির মেয়র জর্জ প্রিন্স সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে এলাকার অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শহরের কেন্দ্রে বন্যা দেখা দেওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া, বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবকাঠামোর ক্ষতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, একই ঝড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে মিশিগান রাজ্যে প্রবেশ করেছে।
এরপর এটি কানাডার অন্টারিও অতিক্রম করে শনিবার রাতে নিউইয়র্কে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ব্রায়ান হার্লি জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে এখনও ঝড় ও শিলাবৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫৯ মিলিয়ন মানুষ তীব্র গরমের সতর্কতা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
নর্থ ডাকোটা, সাউথ ডাকোটা, মিনেসোটা এবং আইওয়া অঙ্গরাজ্যে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশি ছিল।
কিছু কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।
গরম থেকে বাঁচতে ওমাহা এবং মিনিয়াপলিসের মতো শহরগুলোতে কুলিং সেন্টার খোলা হয়েছে।
এছাড়াও, আরও ৮৪ মিলিয়ন মানুষ হিট অ্যাডভাইজারির আওতায় ছিলেন।
আলাস্কায় উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাবানল দেখা দিয়েছে।
বুধবার থেকে এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
রাজ্যের বন ও অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা স্যাম হ্যারেল জানিয়েছেন, এর মধ্যে কিছু আগুন জনবহুল এলাকাগুলোর দিকে দ্রুত ছড়াচ্ছে।
ফায়ারব্যাঙ্কস-এর কাছাকাছি কয়েকটি এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ডেনালি ন্যাশনাল পার্কের কাছে একটি অগ্নিকাণ্ডের কারণেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস