যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এক মর্মান্তিক ঘটনায়, এক বছরের এক শিশু তীব্র গরমে গাড়িতে আটকা পরে মারা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা তাকে গাড়িতে রেখে সেলুনে যান চুল কাটাতে এবং পরে একটি বারে গিয়ে মদ্যপান করেন।
এই ঘটনায় ফ্লোরিডার কর্তৃপক্ষ শিশুটির বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে গত ৬ই জুন। জানা যায়, ৩৩ বছর বয়সী স্কট গার্ডনার নামের ওই ব্যক্তি তার ছেলে, আঠারো মাস বয়সী সেবাস্টিয়ান গার্ডনারকে গাড়িতে রেখে যান।
গাড়ির জানালা সামান্য খোলা থাকলেও, এয়ার কন্ডিশনার চালু ছিল না। এমনকি গাড়িতে একটি ছোট ফ্যানও ছিল, যা শিশুর দিকে তাক করা ছিল।
এই অবস্থায় শিশুটিকে গাড়িতে রেখে গার্ডনার স্থানীয় একটি সেলুনে যান চুল কাটাতে। চুল কাটার পর তিনি পাশের একটি বারে যান এবং সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা কাটান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গার্ডনার যখন বারে ছিলেন, তখন এক কাস্টমার বার মালিকের গাড়িতে ধাক্কা দেয়। গার্ডনার তখন বাইরে এসে গাড়ির ক্ষতি দেখেন, কিন্তু সেবাস্টিয়ানের কথা মনে হয়নি।
এরপর তিনি আবার বারে ফিরে যান এবং আরও পানীয় পান করেন।
দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে গার্ডনার বার থেকে বের হয়ে অল্প দূরে তার বাড়িতে যান। এরপর তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করে জানান, তার ছেলে শ্বাস নিচ্ছে না।
৯১১-এর ফোন রেকর্ডে শিশুর বাবার আর্তনাদ শোনা যায়। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শিশুটির মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল গার্ডনার ৯১১-এ ফোন করার এক থেকে দুই ঘণ্টা আগেই।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততক্ষণে শিশুর শরীরে শক্তভাব চলে আসায়, তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
পরে শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে, সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধারণা অনুযায়ী, গাড়ির তাপমাত্রা সম্ভবত ১১১ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠেছিল। এছাড়া, হাসপাতালে নেওয়ার সময় শিশুটির শরীরের তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন গার্ডনারের আচরণ ছিল সন্দেহজনক। ঘটনার পরে তিনি বারে ফিরে যান এবং গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
তদন্তকারীদের মতে, বারের অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরাও গার্ডনারের মধ্যে শোকের তেমন কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি, যা তাদের সন্দেহের কারণ হয়েছে।
ফ্লোরিডার ভলুসিয়া কাউন্টি শেরিফ অফিসের প্রধান মাইক চিটউড এই ঘটনাকে হৃদয়বিদারক আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই লোকটি একটি ‘আবর্জনা’ এবং সে একজন মিথ্যাবাদী।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই শিশুর মৃত্যুর কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই।”
এই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে এবং গার্ডনারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানি এখনো সম্পন্ন হয়নি।
তথ্য সূত্র: পিপলস