জনপ্রিয় অভিনেতা জনি ডেপ সম্প্রতি তার প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যে হওয়া মানহানির মামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন।
একটি সাক্ষাৎকারে ডেপ তার জীবনের বিভিন্ন সম্পর্কের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকে ‘বোকা’র মতো কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সাক্ষাৎকারে ডেপ বলেন, “আমি সম্ভবত বোকার মতোই ছিলাম।
কারো চোখে যখন কিছু দুঃখ দেখি, একাকীত্ব অনুভব করি, তখন মনে হয়, আমি হয়তো তাদের সাহায্য করতে পারি।” তিনি আরও যোগ করেন, “কিন্তু ভালো কাজের ফল সব সময় ভালো হয় না, কারণ যাদের ভালোবাসতে এবং সাহায্য করতে চান, তারাই একসময় আপনার দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দেয়।”
২০১১ সালে ডেপ ও হার্ডের পরিচয় হয় এবং তারা ২০১৫ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
২০১৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এরপর তাদের সম্পর্ক বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের দিকে মোড় নেয়।
২০১৮ সালে, হার্ড একটি নিবন্ধে ডেপের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য সহিংসতার অভিযোগ আনেন।
এর ফলস্বরূপ, ২০১৯ সালে ডেপ প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
২০২০ সালে, ডেপ যুক্তরাজ্যের একটি ট্যাবলয়েডের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হেরে যান, যেখানে তাকে ‘স্ত্রী নির্যাতনকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
আদালত পত্রিকাটির দাবিকে সত্য বলে রায় দেয়।
এরপর ২০২২ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে তাদের মানহানির মামলার শুনানি হয়।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর, আদালত হার্ডকে ডেপের বিরুদ্ধে আনা মানহানির তিনটি অভিযোগের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং ১০.৩৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
একইসঙ্গে, ডেপকে হার্ডকে ২ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়।
পরবর্তীতে, তারা একটি সমঝোতায় আসেন, যেখানে হার্ড ডেপকে ১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে রাজি হন, যা ডেপ বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় দান করবেন বলে জানান।
এই মামলা এবং এর ফল নিয়ে ডেপ বলেন, “আমি জানতাম আমাকে কিছুটা হলেও আত্মত্যাগ করতে হবে।
সবাই বলছিল, ‘এটা চলে যাবে!’ কিন্তু আমি তো ভরসা করতে পারি না।
যদি আমি সত্যের পক্ষে না দাঁড়াই, তাহলে আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য হিসেবেই থেকে যাবে এবং আমার সন্তানদেরও এটা নিয়ে বাঁচতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “ভার্জিনিয়ায় বিচার শুরুর আগের রাতে আমি নার্ভাস ছিলাম না।
যদি মুখস্থ করার কিছু না থাকে, শুধু সত্যি কথা বলতে হয়, তাহলে কোনো চিন্তা নেই।”
সাক্ষাৎকারে ডেপ তার কাছের কিছু মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা নিয়েও কথা বলেছেন।
তিনি জানান, “আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত কিছু মানুষজন, যারা আমার সন্তানদের পার্টিতে আসত, তারাই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।
তাদের মধ্যে কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলেছে এবং আমার পেছনে খারাপ মন্তব্য করেছে, অথচ তারা সবসময় আমার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে।”
জনি ডেপ তার এই কঠিন সময়ে যারা তাকে সমর্থন করেননি, তাদের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমি #MeToo আন্দোলনের আগের সময়ের একজন পরীক্ষামূলক ব্যক্তি ছিলাম।
আমি বুঝতে পারি, অনেকে সঠিক কাজটি করতে ভয় পাচ্ছিল।”
তথ্য সূত্র: পিপল