বন্ধুত্ব এমন একটি সম্পর্ক যা গভীর বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। পারস্পরিক সম্মান এবং অভিন্ন রুচি এই সম্পর্কের ভিত তৈরি করে। কিন্তু যদি এই ভিত্তি দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একটি অনলাইন ফোরামে এমনই একটি ঘটনার অবতারণা হয়েছে, যেখানে একজন নারী তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ছয় মাস আগে, যখন ওই নারীর সাথে তাঁর এক নতুন বন্ধুর পরিচয় হয়। নারীটি পশুপ্রেমী এবং তাঁর একটি পোষা বিড়াল রয়েছে। বন্ধুত্বের শুরুটা ভালোই ছিল, কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই সমস্যা দেখা দেয়।
নতুন বন্ধুটি প্রায়ই বিড়ালটিকে নিয়ে এমন কিছু কথা বলতে শুরু করেন যা শুনে ওই নারী অস্বস্তি বোধ করতেন। বন্ধুটি বিড়ালটিকে মেরে ফেলার মতো ঠাট্টা করতেন, যা পশুপ্রেমী ওই নারীর কাছে ছিল খুবই পীড়াদায়ক।
শুধু তাই নয়, বন্ধুটি একবার স্বীকার করেন যে, তিনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তাঁর পোষা কুকুরটিকে চার দিনের জন্য একাকী বাড়িতে রেখে এসেছিলেন। বিষয়টি শুনেও ওই নারী কোনো মন্তব্য করেননি।
এরপর বন্ধুটি তাঁকে এমন একটি ভিডিও পাঠান, যেখানে একটি পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছিল। নারীটি যখন এই ধরনের ভিডিও আর না পাঠাতে অনুরোধ করেন, তখন বন্ধুটি বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দেন।
সবশেষে, বন্ধুটি রান্না করা এবং খাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এমন দুটি খরগোশের ভিডিও পাঠান। বিষয়টি ভালোভাবে না নেওয়ায় যখন নারীটি তাঁর উদ্বেগের কথা জানান, তখন বন্ধুটি জানান যে যেহেতু তিনি মাংস খান, তাই তাঁর এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বিষয়টি নিয়ে ওই নারী যুক্তরাজ্যের ‘মামসনেট.কম’ (Mumsnet.com) নামক ওয়েবসাইটে ‘আমি কি অযৌক্তিক?’ (Am I Being Unreasonable?) শিরোনামে একটি প্রশ্ন করেন। সেখানে তিনি তাঁর উদ্বেগের কথা জানান এবং অন্যদের পরামর্শ চান।
অধিকাংশ ব্যবহারকারীই বন্ধুর আচরণকে অস্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের মতে, ওই নারীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা উচিত। অনেকে সরাসরি সম্পর্ক ছিন্ন করারও পরামর্শ দেন।
বিভিন্ন মতামত থেকে এটা স্পষ্ট যে, বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং মূল্যবোধের মিল থাকাটা জরুরি। ভিন্ন মতাদর্শের কারণে অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এই ঘটনার মাধ্যমে সেটাই আবারও প্রমাণিত হলো।
তথ্য সূত্র: People