শিরোনাম: বিমানে এক বিড়ম্বনা: ‘আপনি তো অতটা মোটা নন’, মন্তব্য শুনে হতবাক নন মডেল কেট কোপ
সকালের ফ্লাইটে অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন মডেল কেট কোপ। ডেল্টা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের বাসিন্দা, ২৭ বছর বয়সী এই ‘কার্ভ মডেল’ জানান, বিমানে এক সহযাত্রীর সঙ্গে আলাপকালে নিজের শরীরের গঠন নিয়ে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্যের শিকার হন তিনি।
কেট পেশায় একজন কার্ভ মডেল। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই ঘটনার সূত্রপাত। জানা যায়, কেটের একটি অন্তর্বাসের ছবি দেখে ওই নারী মন্তব্য করেন, ‘আরে, আপনি তো অতটা মোটা নন।’
ঘটনাটি নিয়ে কেট বলেন, এমন মন্তব্যে তিনি মোটেও বিস্মিত হননি। কারণ, প্রায়ই এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় তাকে।
‘আমি যখন কাউকে বলি যে আমি একজন কার্ভ মডেল, তখন অনেকেই যেন ঠিক বুঝতে পারেন না, কী বলবেন,’ যোগ করেন তিনি। কেটের ভাষ্যমতে, তিনি সাধারণত ১০ সাইজের পোশাক পরেন, তবে তা ৮ থেকে ১৪ পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
কেট আরও জানান, ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে কার্ভ মডেলদের জন্য পোশাকের স্যাম্পেল সাধারণত ১২ থেকে ১৬ সাইজের হয়ে থাকে। সরাসরি কারও সঙ্গে দেখা হলে অনেকে তাকে ‘কার্ভি’ বা ‘প্লাস সাইজ’ হিসেবে ভাবতে পারেন না।
অনেকেই যেন তাকে সান্ত্বনা দিতে চান এবং বোঝাতে চান যে তিনি মোটাসোটা নন, যেন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চাপিয়ে দেওয়া ধারণার সঙ্গে তিনি একমত হয়েছেন।
কেট মনে করেন, ওই নারীর মন্তব্যের পেছনে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। তাদের মধ্যে অন্য অনেক বিষয় নিয়েও কথা হয়েছিল।
তবে তিনি জানান, তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে এমন মন্তব্য শুনলে বেশি বিরক্ত লাগে, কারণ তাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।
কেট কোপের মতে, সমাজে চিকন হওয়াটা যেন ভালো এবং মোটা হওয়াটা খারাপ—এমন ধারণা গেঁথে গেছে। এই ধরনের মন্তব্যগুলো আসলে মানুষের শরীরের গঠন এবং নারীদেহ সম্পর্কে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
প্লাস সাইজ মডেলিংয়ের ধারণাটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে, যার পেছনে অ্যাশলে গ্রাহাম, প্যাালোমা এলসেসার, ই critical র্যা লরেন্স, লরেন চ্যান, প্রেশাস লি, এবং হান্টার ম্যাকগ্র্যাডির মতো মডেলদের অবদান রয়েছে।
এই মডেলরা শরীর-বৈচিত্র্যের পক্ষে কথা বলেছেন।
তবে, কেট জানিয়েছেন, প্রায় এক দশক আগে মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করার পর তিনি দেখেছেন, তার মতো মডেলদের জন্য কাজের সুযোগ কমে আসছে।
ভিক্টোরিয়াজ সিক্রেট, স্কিমস, ফেন্টি বিউটি এবং হলিস্টারের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করা এই মডেল মনে করেন, এর প্রভাব পড়ছে তার কমিউনিটিতে।
কেট বলেন, কয়েক বছর আগেও কার্ভ মডেলদের ফ্যাশন জগতে ভালো একটা উপস্থিতি ছিল। তার বন্ধু, যারা ১৬+ সাইজের পোশাক পরেন, তারাও বিভিন্ন ক্যাম্পেইন, সৌন্দর্য বিষয়ক কাজ এবং সম্পাদকীয়তে কাজ করতেন।
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি ধীরে ধীরে শরীর-বান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই সুযোগ কমে গেছে।
কেট আরও যোগ করেন, মিডিয়ার মাধ্যমে শরীরের গড়ন সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। যা তরুণ প্রজন্মের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।
তিনি চান, ফ্যাশন ক্যাম্পেইনগুলোতে তাকেই একমাত্র ‘কার্ভি’ নারী হিসেবে তুলে ধরা না হোক।
তথ্য সূত্র: পিপল