মিলান ফ্যাশন উইকে ২০২৩-এর বসন্ত-গ্রীষ্মের সংগ্রহ নিয়ে হাজির এম্পোরিও আরমানি। ইতালীয় ফ্যাশন জগতের অন্যতম পরিচিত মুখ জর্জিও আরমানি, যিনি নিজে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না, তবে তাঁর ডিজাইন করা পোশাকের ঝলক ছিল চোখে পড়ার মতো।
বোহেমিয়ান ঘরানার এই সংগ্রহে বিশ্ব ভ্রমণের একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা ফ্যাশন সচেতন মানুষের নজর কেড়েছে।
৯০ বছর বয়সী জর্জিও আরমানি, যিনি বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে এই পোশাক প্রদর্শনীর শেষ আকর্ষণ ছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের পুরুষ পোশাক বিভাগের পরিচালক লিও ডেল’অর্কো। সাধারণত, আরমানি নিজে মডেলদের সঙ্গে শেষ পোজে ক্যামেরাবন্দী হন, কিন্তু এবার সেই পরিচিত দৃশ্য দেখা যায়নি।
সংগ্রহটিতে আরাম এবং শৈলীর এক দারুণ মিশ্রণ ছিল। পোশাকগুলোতে উপজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট, যা একজন আধুনিক ও আত্মবিশ্বাসী পুরুষের ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে।
মডেলদের চুলে দেখা গেছে নানান ধরনের বেণী ও রুপালি পুঁতির ব্যবহার, যা পোশাকের সঙ্গে দারুণ মানানসই ছিল। এছাড়া, নেকলেস, আকর্ষণীয় অলঙ্কার, সুতোর কাজ করা ট্যাসেল এবং ফ্রঞ্জ তো ছিলই।
পোশাকের কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে প্রাকৃতিক তন্তু, যেমন – ক্রেপ ও লিনেন। কিছু পোশাকে রুক্ষ বুনন দেখা গেলেও মরোক্কান মোটিফ-এর সিল্কি প্রিন্টগুলো ছিল খুবই আকর্ষণীয়।
প্যান্টগুলোতে কুঁচকানো ও ঢোলা কাটের ভিন্নতা ছিল, যার সঙ্গে লম্বা, সূক্ষ্ম কারুকার্য করা কুর্তা পরা হয়েছে।
ভ্রমণের অনুষঙ্গ হিসেবে ক্রস বডি ব্যাগ, তাঁতের তৈরি ব্যাগ, পুরনো দিনের সুটকেস এবং পায়ের জন্য আরামদায়ক স্যান্ডেল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, মডেলদের চোখে দেখা গেছে খড়ের টুপি, যা সূর্যের আলো থেকে তাদের রক্ষা করেছে।
সব মিলিয়ে, পোশাকগুলো যেন সূর্যের আলোয় ঝলমলে কোনো এক প্রান্তরের গল্প বলছিল।
আরমানির স্পোর্টস লাইনের জন্য, অর্থাৎ EA7 এম্পোরিও আরমানিতে, কারিগরি দিকটির ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। মরুভূমির ভাবনা থেকে তৈরি পোশাকগুলো দর্শকদের মন জয় করেছে।
হালকা পর্দা দিয়ে সজ্জিত একটি কক্ষে মডেলরা যখন হেঁটে আসছিলেন, তখন আবহসংগীত হিসেবে বাজছিল বাতাসের শব্দ, যা পোশাকের রুক্ষ ও মৌলিক অনুভূতিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছিল।
সংগ্রহটির মূল ভাবনা ছিল আত্ম-অনুসন্ধান এবং নিজের শিকড়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। আরমানি তাঁর নান্দনিকতার মূল ভিত্তি হিসেবে বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহকে তুলে ধরেছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন দৌড়বিদ মার্সেল জ্যাকবস, নেটফ্লিক্স-এর ‘এলিট’ সিরিজের অভিনেতা আন্দ্রে লামোগলিয়া, ‘ফরেভার’ সিরিজের অভিনেতা মাইকেল কুপার জুনিয়র এবং বাস্কেটবল খেলোয়াড় কাওয়াই লিওনার্ড ও অ্যান্থনি ব্ল্যাকের মতো তারকারা।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস
