ভিডিও কেলেঙ্কারির পর রবার্ত ফোর্ডের জীবনে কী ঘটেছিল? চাঞ্চল্যকর তথ্য!

টরন্টোর সাবেক মেয়র, রব ফোর্ডের জীবনাবসান নিয়ে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। এক সময়ের জনপ্রিয় এই রাজনীতিকের উত্থান এবং পতনের কাহিনী আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

সম্প্রতি, নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া ‘ট্রেইনরেক: মেয়র অফ মেহেম’ নামের একটি তথ্যচিত্র ফোর্ডের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছে, যা নতুন করে আলোচনায় জন্ম দিয়েছে।

২০১০ সালে টরন্টোর মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর রব ফোর্ড দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেন। কিন্তু ২০১৩ সালে তার জীবনে আসে এক অপ্রত্যাশিত মোড়।

সে বছরই তার মাদক সেবনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। সেই ভিডিওতে তাকে কোকেন সেবন করতে দেখা যায়। প্রথমে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন, কিন্তু পরে তা স্বীকার করতে বাধ্য হন।

এই ঘটনার পর তার রাজনৈতিক জীবন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়।

রব ফোর্ডের বিতর্কিত জীবন আগেও বহুবার সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ১৯৯৯ সালে ফ্লোরিডায় মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর দায়ে তার জেল হয়।

এছাড়াও, মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগে মিথ্যা বলার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০০৬ সালে একটি হকি খেলার সময় মাতলামি করে কয়েকজন ব্যক্তির সাথে দুর্ব্যবহার করার জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছিলেন।

মেয়র থাকাকালীন সময়েও ফোর্ড বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। একবার তিনি অফিসের লেটারহেড ব্যবহার করে টরন্টোর লবিস্টদের কাছ থেকে তার ফুটবল ফাউন্ডেশনের জন্য অর্থ চেয়েছিলেন, যা নিয়ে একটি মামলাও হয়।

যদিও তিনি সেই মামলায় জয়লাভ করেন। এছাড়া, মাতাল অবস্থায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় তার মদ্যপানের সমস্যা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়।

২০১৩ সালে কোকেন সেবনের ভিডিও প্রকাশের পর ফোর্ডের জীবনে যেন দুর্যোগ নেমে আসে। এরপর তার বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ ওঠে।

সিটি কাউন্সিল তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় এবং তার বাজেটও কাটছাঁট করা হয়। ২০১৪ সালে আরেকটি ভিডিওতে তাকে মাদক সেবন করতে দেখা যায়, যার ফলশ্রুতিতে তিনি পুনর্বাসন কেন্দ্রে (rehab) যান।

মেয়র পদ থেকে সরে যাওয়ার পর, ২০১৪ সালে ফোর্ডের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপরেও তিনি কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচনে জয়লাভ করেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

রব ফোর্ডের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল বিতর্কিত। ২০০০ সালে রেনাটা ফোর্ডের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ ছিল, এমন খবরও শোনা গেছে।

এমনকি ২০০৮ সালে তাদের মধ্যে মারামারি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। রেনাটা ফোর্ড পরবর্তীতে তার স্বামীর নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।

২০১৬ সালে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য রেনাটাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে তিনি ম্যাক্সিম বার্নিয়ারের পিপলস পার্টি অফ কানাডার হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জয়ী হতে পারেননি।

রব ফোর্ডের জীবন, উত্থান-পতন এবং বিতর্কের এক মিশ্রণ। তার ঘটনা আজও মানুষকে নাড়া দেয়, যা নতুন করে তৈরি হওয়া তথ্যচিত্রের মাধ্যমে আরও একবার সামনে এসেছে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *