মদের বিল ভাগাভাগি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে এক ব্যক্তি তাঁর বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দেননি। সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, ওই ব্যক্তির এক বন্ধু একটি সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করেন এবং সকলকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রণপত্রে বন্ধুটি উল্লেখ করেন, “এখানে সবাই খরচ সমানভাবে ভাগ করে নেবে, তাই যারা পান করো না, তাদেরও বলছি, অনুগ্রহ করে বিষয়টি নিয়ে কোনও ঝামেলা কোরো না, কারণ আমি হিসাব-নিকাশের ঝক্কি পোহাতে রাজি নই।”
ওই ব্যক্তি জানান, তিনি এবং তাঁর বান্ধবী-ই একমাত্র এই দলে আছেন যারা মদ্যপান করেন না। মদ্যপান করেন না এমন কারও জন্য অ্যালকোহলের খরচ বহন করাটা তাঁর কাছে ন্যায্য মনে হয়নি। তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয় না, আমরা দু’জনেরই মদের জন্য অর্থ দেওয়া উচিত, যা সাধারণত মোট খরচের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।”
বন্ধুদের মদ্যপান করার একটি ধারা ছিল যেখানে প্রচুর বিয়ারের প্রয়োজন হতো, আর মদের খরচ অনেক সময়ই মোট খরচের ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে যেত।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, কারণ ওই ব্যক্তির বান্ধবী, যিনি একজন ছাত্রী এবং তাঁর কোনো রোজগার নেই, তাঁকেও সমানভাবে খরচ দিতে বলা হয়েছিল। “আমি হয়তো অতিরিক্ত কিছু দিতে রাজি থাকতাম, কারণ আমার আর্থিক অবস্থা ভালো, কিন্তু আমার বান্ধবীর ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। সে এমনিতেই খুব সামান্য খায় বা পান করে।”
সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসে ওই ব্যক্তি জানান, “যেহেতু আমি পান করি না, তাই হিসাব-নিকাশ করার কাজটি আমি করতে পারি।” কিন্তু আয়োজক সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হননি। তিনি জানান, “না, তুমি বিষয়টি বুঝছ না। এটা একটা পার্টি, এখানে সবাই সমানভাবে ভাগ করে নেবে। এটা ব্যক্তিগত কোনও বিষয় নয়। আলোচনা এখানেই শেষ।”
নিজেকে উপেক্ষিত মনে হওয়ায় ওই ব্যক্তি পার্টিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই, হোস্ট তাঁর বান্ধবীকে গ্রুপ থেকে সরিয়ে দেন, যা ওই ব্যক্তির মতে ‘অযৌক্তিক’ ছিল।
পরে, অন্য একজন বন্ধু তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন এবং জানান, তাঁর প্রতিক্রিয়া হয়তো একটু বেশি হয়ে গেছে। বন্ধুটি তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, “আমরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক, কিছু অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে আমাদের অসুবিধা কোথায়?” তবে ওই ব্যক্তি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
তিনি মনে করেন, “আমি বুঝি না, যদি আমি পার্টির আয়োজন করতাম, তাহলে আমি কিছুতেই কাউকে তাদের পানীয়ের জন্য অর্থ দিতে বাধ্য করতাম না, যা তারা গ্রহণ করবে না।” তিনি আরও বলেন, “এটা অনেকটা একজন নিরামিষভোজী বন্ধুকে বার-বি-কিউ-এর পার্টিতে ডেকে মাংসের খরচ ভাগ করে নিতে বলার মতো।”
ওই ব্যক্তি স্পষ্ট করে জানান, তিনি পার্টিতে অবদান রাখতে চান। তিনি বলেন, “আমি যদি মদের খরচ নাও দিই, তবুও অন্যান্য খরচ (খাবার, স্ন্যাকস, কোমল পানীয়, সাজসজ্জা ইত্যাদি)-এর জন্য অবশ্যই অর্থ দেব।” এমনকি তিনি জন্মদিনের ব্যক্তির জন্য উপহার বা খাবারের খরচ দিতেও রাজি ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি জন্মদিনের ব্যক্তির জন্য আলাদাভাবে উপহারের ব্যবস্থা করার কথা ভেবেছেন এবং তিনি সেখানেও তাঁর সাধ্যমতো অর্থ দেবেন, যদিও তিনি পার্টিতে যাচ্ছেন না।
তথ্য সূত্র: পিপল