যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, কেইলি স্লোন, তাঁর ছাত্রদের আকর্ষণীয়ভাবে পড়ানোর এক অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। আইডিহোর এই শিক্ষিকা, প্রথম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের লেখার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে নিজের শরীরে মাখন এবং জেলি মেখে এক ভিন্নধর্মী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তাঁর এই কান্ড রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে, এবং শিক্ষকতা জগতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আসলে, কেইলি স্লোন চেয়েছিলেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের লেখার ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী করতে। তাঁর পরিকল্পনা ছিল, বাচ্চাদের সঠিকভাবে কোনো কিছু বর্ণনা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
প্রথমে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের একটি পিনাট বাটার ও জেলি স্যান্ডউইচ বানানোর নির্দেশ লিখতে বলেন। এরপর তিনি সেই নির্দেশগুলি অনুসরণ করে নিজের শরীরে মাখন ও জেলি মাখেন, যা শিক্ষার্থীদের কাছে একটি মজাদার অভিজ্ঞতা তৈরি করে।
শিক্ষার্থীদের তৈরি করা নির্দেশগুলি কতটা সুস্পষ্ট ছিল, তা এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। লেখার সঠিকতা এবং বর্ণনার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য এই ধরনের বাস্তবধর্মী পদ্ধতি নিঃসন্দেহে শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
কেইলি স্লোন জানান, এই পদ্ধতি আসলে নতুন নয়, বরং শিক্ষকতার জগতে বহু আগে থেকেই প্রচলিত। তবে তিনি এটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করেছেন, যা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শিক্ষাকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছে।
শিক্ষকতার চারটি বছরে কেইলি স্লোন একটি বিষয় উপলব্ধি করেছেন, আর তা হলো, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে পড়ানোটা ফলপ্রসূ হয়।
তিনি ‘আমি করি, আমরা করি, তোমরা করো’—এই পদ্ধতিতে পাঠদান করেন। প্রথমে তিনি কাজটি নিজে করেন, তারপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলে করেন, এবং সবশেষে তাদের স্বাধীনভাবে চেষ্টা করতে উৎসাহিত করেন।
নিজের ক্লাসরুমটিকে একটি আকর্ষণীয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে তৈরি করার ব্যাপারেও তিনি যথেষ্ট মনোযোগী ছিলেন। তাঁর মতে, এই ধরনের পরিবেশে শিক্ষার্থীরা আরও ভালো অনুভব করে এবং পড়াশোনায় আগ্রহ বোধ করে।
কেইলি স্লোন মনে করেন, শিশুদের হাসিখুশি রাখাটাও জরুরি, তাই তিনি তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করেন এবং মজাদার ছন্দে কথা বলেন।
পিনাট বাটার ও জেলি ব্যবহারের এই অভিনব কৌশল ছিল তারই একটি অংশ। এই পদ্ধতিতে পড়ানোর ফলে শিক্ষার্থীরা যে শুধু মজা পায় তাই নয়, বরং তাদের মধ্যে লেখার প্রতি আগ্রহও বাড়ে।
কেইলি স্লোন বলেছেন, তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে শেখার আনন্দ দেখতে ভালোবাসেন, যা একজন শিক্ষকের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর এই ভিডিওটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকে তাঁর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন।
তবে কেইলি স্লোন জানিয়েছেন, তিনি সবসময় ইতিবাচক মন্তব্যগুলোকেই গুরুত্ব দেন। তাঁর মতে, অন্য শিক্ষকদেরও উচিত নতুন কিছু করার চেষ্টা করা এবং প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাকে আরও আনন্দদায়ক করে তোলা।
তথ্য সূত্র: পিপল