যুক্তরাষ্ট্রের ইরান আক্রমণের জেরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় তেলের দাম বেড়ে গেলে দেশের বাজারেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের কারণে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৫ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে, বাংলাদেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়বে, কারণ বাংলাদেশকে তেল আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়।
ফলে, দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও খারাপ হলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
হরমুজ প্রণালী বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ তেল বাণিজ্য পথগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখান দিয়ে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করা হয়।
ইরানের পক্ষ থেকে এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে, তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন ইরানকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা থেকে বিরত রাখতে পদক্ষেপ নেয়।
কারণ, প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনের অর্থনীতিতে বেশি ক্ষতি হবে।
চীন পারস্য উপসাগর থেকে আসা মোট তেলের এক-তৃতীয়াংশ কিনে থাকে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র কেনে ৩ শতাংশের কম।
তেলের দাম বাড়লে, তা সরাসরি মার্কিন ভোক্তাদের পাম্পের দামে প্রভাব ফেলবে।
গ্যাস স্টেশনে তেলের দাম বাড়ার ৫ দিনের মধ্যে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
যদি তেলের দাম বাড়ে, তাহলে গ্যাস ও ডিজেলের দামও প্রতি গ্যালনে ৭৫ সেন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি এবং ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার কারণে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
যদিও গত কয়েক মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা স্থিতিশীল ছিল, তবে গ্রীষ্মকালে তা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।
কারণ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে, পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে, যা খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য জিনিসের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে।
তাই, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন