খেলোয়াড়কে দল ছাড়তে প্ররোচনা! মায়ামির বিরুদ্ধে ক্ষেপে উইসকনসিন, আদালতে মামলা

শিরোনাম: ফুটবল খেলোয়াড়কে দল পরিবর্তন করতে প্ররোচনা, ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিনের মামলায় ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ক্রীড়া জগতে খেলোয়াড়দের দল পরিবর্তনের বিতর্কিত এক ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন তাদের ফুটবল দলের এক খেলোয়াড়কে অন্য দলে ভেড়ানোর অভিযোগে ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বিষয়টি এখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে খেলোয়াড়দের নাম, ছবি ও পরিচিতি ব্যবহারের অধিকার (NIL – নাম, ছবি ও পরিচিতি ব্যবহারের অধিকার) সংক্রান্ত চুক্তি এবং দলবদলের মতো বিষয়।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, উইসকনসিনের ‘ব্যাজার্স’ দলের খেলোয়াড় ‘ছাত্র-ক্রীড়াবিদ এ’-কে মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের দলে খেলার জন্য প্ররোচিত করেছিল। অভিযোগ, এই খেলোয়াড় উইসকনসিনের সাথে একটি লাভজনক NIL চুক্তি থাকা সত্ত্বেও, মায়ামিতে যোগ দিতে রাজি হন। উইসকনসিন কর্তৃপক্ষের দাবি, মায়ামির এই পদক্ষেপ তাদের আর্থিক ও সুনামগত ক্ষতি করেছে।

জানা গেছে, খেলোয়াড় ‘এ’-এর দলবদলের ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। খেলোয়াড়টি গত ডিসেম্বরে দলবদলের জন্য আবেদন করেন এবং পরবর্তীতে জানা যায় তিনি মায়ামির হয়ে খেলবেন। বিষয়টি নিয়ে খেলোয়াড়ের প্রতিনিধি ড্যারেন হেইটনার জানান, উইসকনসিন খেলোয়াড়ের নাম ‘খেলোয়াড় স্থানান্তর তালিকা’ (Player Transfer List)- তে অন্তর্ভুক্ত করতে রাজি ছিল না, যার ফলে অন্যান্য দলের সঙ্গে তার আলোচনা বাধাগ্রস্ত হয়। জানুয়ারিতে হেইটনার নিশ্চিত করেন যে খেলোয়াড়টি মায়ামির হয়ে খেলবেন।

এই মামলার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে কলেজ পর্যায়ের খেলাধুলায় খেলোয়াড়দের দলবদলের স্বাধীনতা বৃদ্ধি এবং NIL চুক্তির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের অর্থ উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণে। বর্তমানে, NIL চুক্তির মাধ্যমে খেলোয়াড়েরা মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারে। এই বিষয়টি খেলোয়াড়দের দলবদলের ক্ষেত্রে নতুন করে চুক্তি এবং অঙ্গীকারের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, খেলোয়াড়দের NIL অধিকার যদি কোনো তৃতীয় পক্ষ দ্বারা লঙ্ঘিত হয়, তবে এর কোনো মূল্য থাকে না। উইসকনসিন কর্তৃপক্ষের মতে, মায়ামি এবং খেলোয়াড় ‘এ’-এর মধ্যে অননুমোদিত যোগাযোগ হয়েছিল। উইসকনসিন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা এর প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করবে।

অন্যদিকে, মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, খেলোয়াড়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, খেলোয়াড় মায়ামিতে খেলার পরিকল্পনা করছেন। উইসকনসিন জানিয়েছে, তারা এই মামলার বিষয়ে তাদের অবস্থান এবং কলেজ ক্রীড়া জগতে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই ঘটনার প্রভাব শুধু উইসকনসিন এবং মায়ামির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। NIL চুক্তি এবং খেলোয়াড়দের দলবদলের নিয়ম নিয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেক মামলা হতে পারে, যা কলেজ পর্যায়ের খেলাধুলার ভবিষ্যৎকে নতুন দিকে নিয়ে যাবে।

আরেকটি উদাহরণ হিসেবে, টেনেসির দুই খেলোয়াড়, নিকো এবং ম্যাডেন ইয়ামালেওয়ার দলবদলও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। নিকো ইয়ামালেওয়া ২.৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৬.৪ কোটি টাকা) -এর একটি NIL চুক্তি ত্যাগ করে অন্য দলে যোগ দেন। এছাড়াও, আর্কানসাসের খেলোয়াড় ম্যাডেন ইয়ামালেওয়াও দলবদলের সিদ্ধান্ত নেন, যদিও তার চুক্তি ছিল ৫ লক্ষ ডলার (প্রায় ৫.৫ কোটি টাকা)।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *