ইন্দোনেশিয়ার একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির ভেতরে আটকা পড়েছেন ২৬ বছর বয়সী এক ব্রাজিলীয় পর্যটক। গত তিন দিন ধরে চলা উদ্ধার অভিযান এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং দুর্গম ভূখণ্ডের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শনিবার, ২১শে জুন, সকালে লম্বক দ্বীপের মাউন্ট রিনজানি পর্বতের দিকে যাওয়ার পথে সেমার নুনগালের কাছে খাদে পড়ে যান জুলিয়ানা মারিন্স নামের ওই তরুণী। রিনজানি জাতীয় উদ্যান সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার পরে তাকে উদ্ধারের জন্য দ্রুত অভিযান শুরু করা হয়।
সোমবার, ২৩শে জুন, উদ্ধারকারী দল ড্রোন ব্যবহার করে মারিন্সকে একটি পাথরের খাঁজে আটকা অবস্থায় শনাক্ত করে। প্রায় ৫০০ মিটার গভীরে আটকে থাকা অবস্থায় তিনি নিথর ছিলেন। উদ্ধারকর্মীরা জানান, মারিন্সের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রথমে একটি অ্যাংকর পয়েন্ট স্থাপনের চেষ্টা করা হয়, তবে প্রায় ৩৫০ মিটার গভীরে যাওয়ার পর বড় আকারের কিছু পাথরের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
এরপর উদ্ধারকর্মীরা সরাসরি পাহাড় বেয়ে নামার চেষ্টা করেন।
উদ্ধার কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় উদ্ধারকারীদের বেগ পেতে হচ্ছে। টিবি ব্রাজিল ইবিসি’র ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মারিন্স আগ্নেয়গিরির ভেতরে মাটিতে বসে আছেন এবং তার শরীরে সামান্য নড়াচড়া দেখা যাচ্ছে।
জানা গেছে, উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যে মারিন্সের কাছে খাবার ও জল পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে, কিন্তু তাকে এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শনিবার উদ্ধারকর্মীরা মারিন্সের সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনেছিলেন। কিন্তু ৩০০ মিটার নিচে নামার পর তার আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
রবিবার সকালে ড্রোন ক্যামেরায় মারিন্সকে আগের স্থানে পাওয়া যায়নি। পরে সোমবার তাকে আবার খুঁজে পাওয়া গেলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ স্থগিত করতে হয়।
এদিকে, মারিন্সের পরিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তারা দ্রুত সাহায্যের আবেদন করে লিখেছেন, “পুরো একটা দিন পেরিয়ে গেলেও তারা কেবল ২৫০ মিটার নিচে নামতে পেরেছে। জুলিয়ানার থেকে তাদের দূরত্ব এখনো ৩৫০ মিটার। আমরা সাহায্য চাই, আমরা দ্রুত জুলিয়ানাকে উদ্ধার করতে চাই।”
পরে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুইজন অভিজ্ঞ গাইডকে উদ্ধারের জন্য পাঠানো হয়েছে। জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দল মারিন্সকে নিরাপদে উদ্ধারের জন্য তাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: পিপল