গরমে দীর্ঘক্ষণ হাঁটাচলার পর ত্বকে দেখা দিতে পারে এক ধরনের ফুসকুড়ি। একে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘এক্সারসাইজ-ইনডিউসড ভাস্কুলাইটিস’ বা সংক্ষেপে ইআইভি। এই সমস্যাটি অনেকের কাছে ‘ডিজনি র্যাশ’ নামেও পরিচিত, কারণ এটি সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে বিনোদন পার্কগুলোতে হাঁটাচলার কারণে দেখা যায়।
তবে, এই সমস্যা শুধু বিনোদন পার্কের সঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়। গরম আবহাওয়ায় যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে কাজ করেন, যেমন – শ্রমিক, কৃষক বা বিভিন্ন উৎসবে দীর্ঘ সময় ধরে ঘোরাঘুরি করেন, তাদেরও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ইআইভি হলে সাধারণত পায়ের নিচের অংশে, যেমন – পায়ের পাতা, গোড়ালি বা পেশিতে লালচে বা বেগুনি রঙের ফুসকুড়ি দেখা যায়। অনেক সময় চামড়ার ওপর ছোট ছোট লাল বা বেগুনি ফোটা দেখা যায়। আক্রান্ত স্থানে চুলকানি, জ্বালা বা সামান্য ব্যথাও হতে পারে।
কারো কারো ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনুভূতি নাও হতে পারে।
এই ধরনের ফুসকুড়ির প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত হাঁটাচলা বা শারীরিক পরিশ্রম, সেই সাথে গরম আবহাওয়া এবং সূর্যের আলোতে বেশিক্ষণ থাকা। এছাড়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করাও এই সমস্যার একটি বড় কারণ হতে পারে।
গরমকালে যখন শরীর ঘামে, তখন শরীর আর্দ্রতা হারায়, ফলে ত্বক আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
ইআইভি থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। গরমকালে বাইরে বের হলে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটাচলার পরিকল্পনা থাকলে, হালকা রঙের পোশাক পরা উচিত, যা সূর্যের আলো থেকে ত্বককে রক্ষা করবে। সম্ভব হলে লম্বা হাতাযুক্ত পোশাক পরুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করে শরীরকে সতেজ রাখুন। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি শরীরে জল জমা করতে পারে এবং ফোলাভাব বাড়াতে পারে।
যদি ফুসকুড়ি দেখা দেয়, তবে কিছু ঘরোয়া উপায়ে এর উপশম করা যেতে পারে। আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা ভেজা কাপড় বা বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, চুলকানির জন্য মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশ্রাম নেওয়ার সময় পা সামান্য উঁচু করে রাখলে ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
সাধারণত, এই ফুসকুড়ি তেমন গুরুতর নয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে, যদি ফুসকুড়ি গুরুতর আকার ধারণ করে অথবা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন