সকালের নাস্তার সঙ্গে ভিটামিন সেবন করা উচিত নাকি রাতের খাবারের পরে? ভিটামিন গ্রহণের সঠিক সময় নিয়ে অনেকের মনেই দ্বিধা থাকে। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন অপরিহার্য, তবে এটি সঠিকভাবে গ্রহণ করাটাও জরুরি।
আমাদের শরীরে ১৩ ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন, যার মধ্যে ৯টি জলীয় এবং ৪টি চর্বি-দ্রবণীয়।
ভিটামিন গ্রহণের সময় এর কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। কিছু ভিটামিন খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা ভালো, আবার কিছু খালি পেটে গ্রহণ করা উপযুক্ত।
এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
জলীয় ভিটামিন (Water-Soluble Vitamins): এই ভিটামিনগুলো শরীরে জমা থাকে না, তাই প্রতিদিন গ্রহণ করা প্রয়োজন। ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স এই গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই ভিটামিন যেকোনো সময়, খাবার খাওয়ার আগে বা পরে গ্রহণ করা যেতে পারে।
তবে, যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাদের খাবার খাওয়ার পরে ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত।
বি ভিটামিন শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। বি১ (থায়ামিন), বি২ (রিবোফ্লাভিন), বি৩ (নিয়াসিন), বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড), বি৬ (পাইরিডক্সিন), বি৭ (বায়োটিন), বি৯ (ফোলেট), এবং বি১২ (কোবালামিন) – এই আটটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তৈরি করে।
সাধারণত, বি ভিটামিন সকালে গ্রহণ করা ভালো। বিশেষ করে, ভিটামিন বি১২ এর অভাব পূরণ করতে খালি পেটে এটি গ্রহণ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন (Fat-Soluble Vitamins): এই ভিটামিনগুলো শরীরে জমা থাকে এবং চর্বির সঙ্গে গ্রহণ করা ভালো। ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ সাধারণত খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত।
গাজর, মিষ্টি আলু এবং ডিমের কুসুমে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন ডি খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা ভালো, বিশেষ করে ফ্যাটযুক্ত খাবারের সঙ্গে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্যাটযুক্ত খাবারের সঙ্গে ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে তা শরীরে ভালোভাবে শোষিত হয়।
ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং শরীরের কোষকে রক্ষা করে। এটি সাধারণত খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত।
ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন কে-ও খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা ভালো।
মাল্টিভিটামিন (Multivitamins): মাল্টিভিটামিন হলো ভিটামিন এবং খনিজ লবণের মিশ্রণ। মাল্টিভিটামিন সাধারণত খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত, কারণ এতে জলীয় এবং চর্বি-দ্রবণীয় উভয় ধরনের ভিটামিন থাকে।
খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করলে ভিটামিনগুলো ভালোভাবে শোষিত হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হয়।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ: ভিটামিন গ্রহণের সঠিক সময় ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কোনো ভিটামিন সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন।