ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর, তেহরানের দুর্বলতাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে প্রবাসী কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। তাদের ধারণা, এই পরিস্থিতিতে ইরানে ক্ষমতার পরিবর্তন হতে পারে।
খবর অনুযায়ী, এই গোষ্ঠীগুলো মূলত ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে এবং তারা ইরানের শাসকদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আনাগোনা রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে সশস্ত্র সংগ্রামে জড়িত ছিল।
যদিও তারা এখন ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে সীমান্ত এলাকা থেকে সরে এসেছে এবং অস্ত্র জমা দিয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখনো তাদের লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই মুহূর্তে ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বেশ জটিল। ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের পর দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের উপর এর প্রভাব পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রবাসী কুর্দি গোষ্ঠীগুলো তাদের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, এই সংকট তাদের স্বাধীনতা অর্জনের সুযোগ এনে দিতে পারে।
আবার কেউ কেউ মনে করেন, হুট করে কোনো পদক্ষেপ নিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে।
কুর্দিস্তান ফ্রিডম পার্টির (PAK) মুখপাত্র খলিল নাদেরি বলেছেন, “কিছু দল মনে করে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ কুর্দিদের জন্য একটি ভালো সুযোগ।” তবে তিনি এর সঙ্গে একমত নন।
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কুর্দিদের অধিকারের জন্য নয়, বরং নিজেদের সুরক্ষার জন্য ইরানের উপর আঘাত হেনেছে।
অন্যদিকে, বামপন্থী কোমালা পার্টির নেতা আব্দুল্লাহ মোহতাদি মনে করেন, এই যুদ্ধ একটি “টার্নিং পয়েন্ট” হতে পারে।
তিনি বলেন, “যুদ্ধ অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন আনতে পারে। আমরা আশা করি, এবার তাই হবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার দল সশস্ত্র সংগ্রামের পথে হাঁটছে না, তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
বিভিন্ন কুর্দি গোষ্ঠীর মধ্যে এই ইস্যুতে মতভেদ রয়েছে। তারা হয় একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র চায়, অথবা ইরানের মধ্যে ইরাকের কুর্দিদের মতো স্বায়ত্তশাসন চায়।
এই ভিন্নতা তাদের মধ্যে ঐক্য গঠনে বাধা সৃষ্টি করেছে।
কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই তৎপরতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কুর্দি গোষ্ঠীগুলোর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ এখন অনেকখানি নির্ভর করছে ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির ওপর।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস