সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, ব্যক্তিগত জীবন প্রকাশ্যে আনার প্রবণতা বেড়েছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। সম্প্রতি, এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে যেখানে একজন মার্কিন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর একটি টিকটক ভিডিও নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটিতে তিনি তার স্বামীর মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন থাকার কথা উল্লেখ করেন, যা কিছু নেটিজেনের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তাদের মতে, এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা সামরিক নিরাপত্তা বিধির পরিপন্থী।
ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন ক্যাসডি ইয়ারব্রো, যিনি একজন গৃহিণী এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর রিজার্ভে কর্মরত তার স্বামীর স্ত্রী। তিনি প্রায়শই তার দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে জীবন কাটানোর অভিজ্ঞতা টিকটকে শেয়ার করেন।
গত ২৪শে জুন, ২০২৫ তারিখে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে তিনি জানান যে তার স্বামী মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন হয়েছেন। ভিডিওটিতে তিনি একটি জনপ্রিয় গানের সাথে ঠোঁট মেলান, যার ক্যাপশনে ছিল, “যুদ্ধবিরতি হয়েছে শুনে আর রাগ নেই।
ভিডিওটির কমেন্ট সেকশনে অনেকে ক্যাসডিকে সতর্ক করে বলেন, তার এই ধরনের পোস্ট করা উচিত হয়নি। তাদের মতে, এতে সামরিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
বিশেষ করে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে অনেক দর্শক উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা সৈন্যদের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
তবে, ক্যাসডি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তিনি সব সময় সামরিক নিরাপত্তা বিধি (OPSEC) সম্পর্কে সচেতন এবং কোনো ঝুঁকি তৈরি হয় এমন কিছু তিনি করেন না।
তিনি আরও বলেন, ভিডিওটি পোস্ট করার আগে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তার অনুমতি নিয়েই তা তৈরি করেছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তার মতে, সাধারণভাবে সৈন্যদের মোতায়েন থাকার কথা উল্লেখ করা OPSEC লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে না।
OPSEC হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখা হয়, যা শত্রুপক্ষের হাতে গেলে সামরিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে, সৈন্যদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা তাদের কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা হলে তা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০,০০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছেন। ক্যাসডির ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা এবং সামরিক নিরাপত্তার মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনেকেই মনে করেন, অনলাইনে কিছু শেয়ার করার আগে প্রত্যেককে সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি না হয়।
তথ্য সূত্র: পিপল