১২ বছরের ছেলের মৃত্যু: সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যালেঞ্জে শোকের ছায়া!

সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ: ১২ বছরের বালকের মৃত্যু, অভিভাবকদের সতর্কবার্তা।

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছেই। সম্প্রতি, ইংল্যান্ডের ক্যাসেলফোর্ডে ১২ বছর বয়সী এক বালকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে, যা আবারও এই উদ্বেগকে সামনে নিয়ে এসেছে।

জানা গেছে, ছেলেটি সম্ভবত ‘ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ’ নামক একটি বিপজ্জনক অনলাইন খেলায় অংশ নিয়েছিল। এই ঘটনার পর অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ এই ধরনের চ্যালেঞ্জগুলো শিশুদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

খবর অনুযায়ী, গত ২৭শে জুন, শুক্রবার, ম্যানর গ্রোভে অবস্থিত একটি বাড়িতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়, যেখানে ওই বালককে নিয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছিল। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ বালকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, কিন্তু সেখানে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে, তবে এটিকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখা হচ্ছে না।

ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ হলো একটি অনলাইন খেলা, যেখানে শ্বাসরোধ করে চেতনা হারানোর চেষ্টা করা হয়। এর ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া সহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই চ্যালেঞ্জের কারণে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

এই ঘটনার পর, বালকের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানাতে একটি GoFundMe পেজ খোলা হয়েছে। পেজের উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, “একটি বিপজ্জনক ইন্টারনেট চ্যালেঞ্জ তার জীবন কেড়ে নিয়েছে।”

জানা গেছে, বালকটির নাম ছিল সেবাস্টিয়ান। সে ছিল অত্যন্ত মেধাবী এবং হাসিখুশি একটি ছেলে। সে নিজে থেকেই গিটার ও কিবোর্ড বাজানো শিখেছিল, ছবি আঁকতে ভালোবাসত।

এই ঘটনার কয়েক মাস আগে, আরও একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছিল। চারজন ব্রিটিশ কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর জন্য তাদের অভিভাবকেরা TikTok-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

তাঁদের অভিযোগ, TikTok-এর অ্যালগরিদম শিশুদের ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জের মতো বিপজ্জনক কনটেন্ট দেখতে উৎসাহিত করত, যা তাদের মৃত্যুর কারণ হয়েছে। অভিভাবকদের দাবি, TikTok মুনাফা বাড়ানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, তাঁরা যেন সন্তানদের অনলাইন কার্যক্রমের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখেন। তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন, তারা অনলাইনে কী দেখে এবং কার সঙ্গে কথা বলে সে বিষয়ে খোঁজ নিন।

কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, অনলাইন জগৎও বাস্তব জগতের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সচেতনতা এবং সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *