যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার পুনরাবৃত্তি, নিহত মানবাধিকার নেতার কন্যার কণ্ঠে গভীর বেদনা।
ষাটের দশকে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের হাতে নিহত হওয়া কৃষ্ণাঙ্গ মানবাধিকার নেতা মেদগার এভার্সের মেয়ে রিনা এভার্স-এভারিট আজও আমেরিকার সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতার একই রূপ দেখতে পান। তাঁর পিতার মৃত্যুর পর কেটে গেছে বহু বছর, কিন্তু সেই ক্ষত আজও শুকোয়নি।
সম্প্রতি, তাঁর পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই উদ্বেগের কথা জানান।
মিসিসিপির জ্যাকসনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন রিনার মতো আরও অনেকে, যাঁরা রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হওয়া স্বজনদের হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রবার্ট এফ কেনেডির কন্যা কেরি কেনেডি এবং ভোটাধিকার কর্মী ভারনন ডাহমারের কন্যা বেটি ডাহমার।
এই অনুষ্ঠানে বক্তারা ১৯৬০-এর দশকে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা এবং বর্তমানে আমেরিকায় সহিংসতার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেরি কেনেডি তাঁর পিতার হত্যাকারীর প্রতি ক্ষমা প্রার্থনার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “আমি চাইনি আর কারও এমন দুঃখ হোক।”
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জর্জিয়ার সাবেক গভর্ণর প্রার্থী এবং ভোটাধিকার কর্মী স্ট্যাসি অ্যাব্রামস। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে মানবাধিকার কর্মীদের নাম অপসারণের চেষ্টার তীব্র নিন্দা করেন।
অ্যাব্রামস বলেন, “তাঁরা একটি জাহাজের নাম পরিবর্তন করতে চান, কারণ তাঁরা চান না আমরা তাঁদের কথা মনে রাখি, যাঁরা আমাদের এতদূর এগিয়ে নিয়ে এসেছেন।”
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে কিভাবে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণকারীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁদের মতে, এই ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য এক বিরাট হুমকি।
মেদগার এভার্স-এর মেয়ে রিনা এভার্স-এভারিট তাঁর পিতার জীবন ও আদর্শের কথা তুলে ধরে বলেন, মানুষ যেন সেই ঘৃণা ও বিদ্বেষের কথা মনে রাখে, যা তাঁর পিতাকে হত্যার কারণ হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে, যাতে আমরা সেই ভয়ঙ্কর, কদর্য, বর্ণবাদী ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকার সমাজে বর্তমানে রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা অতীতের অনেক সময়ের চেয়ে বেশি। তাঁদের মতে, সমাজের এই অস্থির পরিস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস