মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্যে কিশোরদের মধ্যে হয়রানি কমাতে অভিনব এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। টেনেসী রাজ্যে সম্প্রতি এমন একটি আইন চালু হয়েছে যেখানে কোনো কিশোর যদি বুলিং বা সাইবার হয়রানির সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হয়, তাহলে আদালত তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত করতে পারবে।
খবর অনুযায়ী, এই স্থগিতাদেশ এক বছর পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে। আইনটির প্রস্তাবক, স্থানীয় আইনসভার সদস্য লয়েল রাসেল, জানিয়েছেন, “আমি মনে করি, ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত করার মতো পদক্ষেপ নিলে কিশোরদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যাবে।”
তিনি আরও জানান, এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হয়রানির প্রবণতা কমানো এবং তাদের এই ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখা।
তবে, এই আইনের কার্যকারিতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, শুধু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, হয়রানির মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যারা এই ধরনের কাজে জড়িত, তাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তাদের জীবনযাত্রায় এমন কী ঘটছে, যার ফলে তারা অন্যদের প্রতি এমন আচরণ করছে, তা খুঁজে বের করা দরকার।
টেনেসীতে বুলিং প্রতিরোধের জন্য এর আগেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালে সেখানকার আইনপ্রণেতারা বুলিং এবং সাইবার হয়রানির সংজ্ঞা স্পষ্ট করেছেন।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, এই ধরনের আচরণের কারণে তরুণদের মধ্যে যে সহিংসতা ও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায়, তা কমানো।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের আইন নিঃসন্দেহে ভালো, তবে শুধু শাস্তির দিকে মনোযোগ না দিয়ে কাউন্সেলিং এবং সচেতনতা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
যারা এই ধরনের ঘটনার শিকার, তাদের সাহায্য চাওয়াকে দুর্বলতা হিসেবে না দেখে, বরং একটি শক্তি হিসেবে দেখা উচিত।
এই আইনটি প্রথমবার অপরাধীদের জন্য কিছু সুযোগ রেখেছে। অভিযুক্ত কিশোররা কিছু শর্তসাপেক্ষে সীমিত ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে।
এক্ষেত্রে তাদের স্কুল, কাজ অথবা ধর্মীয় স্থানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। তবে, এর জন্য তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে, সেইসঙ্গে ফি জমা দেওয়া, বয়স সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ এবং পরীক্ষার মতো বিষয়গুলোও সম্পন্ন করতে হবে।
এছাড়াও আদালতের অনুমতিও প্রয়োজন হবে, যেখানে তাদের ড্রাইভিংয়ের সময় এবং স্থান উল্লেখ করা হবে।
ভারতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বুলিং একটি উদ্বেগের বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, স্কুলের বন্ধু কিংবা পরিচিতজনদের দ্বারা শিশুরা মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
এমতাবস্থায়, টেনেসীর এই আইনটি বুলিং প্রতিরোধের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। তবে, শুধু আইন করে নয়, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এর মোকাবিলা করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন