শিরোনাম: রাজনৈতিক বাগ বিতণ্ডায় জড়িয়ে টেসলার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের রাজনৈতিক মন্তব্য এবং কার্যকলাপের কারণে কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের বাদানুবাদ আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা টেসলার শেয়ারের দামে প্রভাব ফেলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্কের এই ধরনের পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমাচ্ছে এবং কোম্পানির ব্যবসায়িক ক্ষতি করছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে টেসলার গাড়ির বিক্রি ১৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। গত বছর একই সময়ে যেখানে প্রায় ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার গাড়ি বিক্রি হয়েছিল, সেখানে এবার তা কমে ৩ লক্ষ ৮৭ হাজারে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম প্রান্তিকে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে, টেসলার মুনাফা ৭১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের রাজনৈতিক বিতর্কগুলো টেসলার ভাবমূর্তির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। এর ফলে, একদিকে যেমন গাড়ির বিক্রি কমছে, তেমনি বিনিয়োগকারীরাও তাদের অর্থ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে, টেসলার বাজারে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। কোম্পানিটি লাভের জন্য এখন অন্য গাড়ী প্রস্তুতকারকদের কাছে “নিয়ন্ত্রক ক্রেডিট” বিক্রির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় অনেকে আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন টেসলার সরকারি চুক্তিগুলোতে কোনো ধরনের বাধা দিতে পারে। যদিও মাস্ক এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তবে তাদের মধ্যে এখনকার এই বিরোধ টেসলার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। মাস্ক যখন ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন, তখন টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছিল। কিন্তু এখন, সেই দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে টেসলার শেয়ারের দাম ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশে সরাসরি টেসলার গাড়ি পাওয়া না গেলেও, বিশ্ব বাজারে এর পারফরম্যান্সের প্রভাব ভবিষ্যতে দেশের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে পড়তে পারে। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে, টেসলার এই ধরনের সমস্যা বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের প্রবণতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাস্কের এখন ব্যবসায় মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে টেসলার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকে। রাজনৈতিক বিতর্ক থেকে দূরে থাকলে, সম্ভবত কোম্পানিটি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।