**মার্কিন সিনেটে এআই নিয়ন্ত্রণের পথে রাজ্যের অধিকার রক্ষার লড়াই, বিতর্কিত প্রস্তাবনা বাতিল**
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর ক্ষমতা সীমিত করার একটি প্রস্তাবনা বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল, ২০২৪) এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সিনেটের অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন পাওয়া যায়, যার ফলস্বরূপ প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
খবর অনুযায়ী, এই প্রস্তাবনাটি মূলত রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে আনা হয়েছিল, যেখানে এআই বিষয়ক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোকে এক দশকের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছিল।
এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এআই প্রযুক্তির বিকাশে সহায়তা করা। প্রস্তাব উত্থাপনকারীদের যুক্তি ছিল, বিভিন্ন রাজ্যে এআই বিষয়ক ভিন্ন ভিন্ন আইন থাকলে তা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।
তবে প্রস্তাবের বিরোধীরা, বিশেষ করে বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর ও কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ রাজ্যগুলোর বাসিন্দাদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষমতাকে খর্ব করবে।
প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হলে, রাজ্যগুলো তাদের নিজস্ব নাগরিকদের জন্য এআই বিষয়ক কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো না। উদাহরণস্বরূপ, শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বা শিল্পীদের কণ্ঠস্বর বা ছবির অপব্যবহার রোধ করার মতো আইন তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়তো।
বিতর্কিত এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সিনেটরদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা যায়। প্রস্তাবের সমালোচকরা এটিকে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতি পক্ষপাতমূলক বলে অভিহিত করেন।
তাদের মতে, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার বাইরে রাখবে। বিশেষ করে, অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ ছিল, কারণ তারা মনে করেন এআই প্রযুক্তি শিশুদের ক্ষতি করতে পারে।
প্রস্তাবটি বাতিলের পূর্বে, রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ এটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য শেষ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি প্রস্তাবের মেয়াদ পাঁচ বছরে নামিয়ে আনা এবং কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করেন, যেমন শিশুদের নিরাপত্তা বিষয়ক আইন অথবা সঙ্গীতশিল্পীদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রণীত আইন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিনেটর মারশা ব্ল্যাকবার্নের আপত্তির কারণে সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
সিনেটের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রতিটি রাজ্য তাদের নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী এআই ব্যবহারের নিয়ম তৈরি করতে পারবে। এর মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ—উভয় দিকেই নজর রাখা সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস