যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের ইমেইল ফাঁস করার হুমকি দিয়েছে ইরান-পন্থী হ্যাকাররা। মার্কিন কর্তৃপক্ষের মতে, এটি ট্রাম্প এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যে চালানো একটি ‘কুৎসা অভিযান’।
সাইবার নিরাপত্তা এবং অবকাঠামো নিরাপত্তা সংস্থা (সিআইএসএ)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ধরনের কার্যকলাপ নিছক ‘ডিজিটাল অপপ্রচার’।
সম্প্রতি, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর, ওয়াশিংটন আশঙ্কা করছে যে ইরান সাইবার হামলা চালাতে পারে। সিআইএসএ’র মুখপাত্র মার্সি ম্যাককার্থি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “শত্রুভাবাপন্ন একটি বিদেশি শক্তি, কথিতভাবে চুরি করা ও যাচাইবিহীন তথ্যের অবৈধ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি, অখ্যাতি এবং বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে।”
এই অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা সরাসরি অভিযুক্ত হ্যাকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। হ্যাকাররা দাবি করেছে, তাদের কাছে ট্রাম্পের চিফ অফ স্টাফ সুজি ওয়াইলস, অন্যান্য শীর্ষ উপদেষ্টা এবং পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের ইমেইলের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।
উল্লেখ, স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগের কারণে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, ইরানের তিনজন হ্যাকার ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে হানা দিয়েছিল। হ্যাকাররা ডেমোক্রেট দলের জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের প্রচারণাকেও লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং ট্রাম্পের কাছ থেকে পাওয়া কিছু তথ্য ডেমোক্র্যাট ও মিডিয়া কর্মীদের কাছে ফাঁস করার চেষ্টা করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-এর পক্ষ থেকেও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
তারা জানিয়েছে, তেহরান-সমর্থিত হ্যাকিং গ্রুপগুলো ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর হামলা চালাতে পারে।
হ্যাকাররা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো যেমন— বিদ্যুৎ, পরিবহন এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোতে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এছাড়া, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রতিরক্ষা ঠিকাদার বা অন্যান্য আমেরিকান কোম্পানিকেও নিশানা করতে পারে।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ সাইবার সুরক্ষার জন্য নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। অতীতে, ইরান-পন্থী হ্যাকাররা মার্কিন ব্যাংক, প্রতিরক্ষা ঠিকাদার এবং জ্বালানি কোম্পানিগুলোর উপর হামলা চালিয়েছিল, তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।
তথ্য সূত্র: