আলোচনা সফল! চীনকে চিপ ডিজাইন সফটওয়্যার রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে সম্প্রতি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সহায়ক হবে।

লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য আলোচনার ফলস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে চিপ ডিজাইন সফটওয়্যার রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় চীনও বিরল মৃত্তিকা (rare earth) খনিজগুলির (যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান) যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির বিধিনিষেধ শিথিল করেছে।

মে মাসে উভয় দেশের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, শীর্ষস্থানীয় চিপ ডিজাইন সফটওয়্যার প্রস্তুতকারক সংস্থা সিনপসিস, ক্যাডেন্স এবং সিমেন্সকে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে অবহিত করেছে।

এই কোম্পানিগুলো এখন চীনে তাদের সফটওয়্যার ও সরঞ্জামগুলির অ্যাক্সেস পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

শুরুর দিকে, চীন বিরল মৃত্তিকা উপাদান রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলে, তার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এই চিপ ডিজাইন সফটওয়্যার রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলি আধুনিক ইলেকট্রনিকস এবং সামরিক সরঞ্জামের জন্য অপরিহার্য।

চীনের এই পদক্ষেপের কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল।

চুক্তি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইথেন রাসায়নিক দ্রব্য রপ্তানির ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে।

অন্যদিকে, চীন বিদ্যমান লাইসেন্সিং ব্যবস্থার অধীনে বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি সহজ করতে রাজি হয়েছে।

বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলি উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

তবে, এই চুক্তিতে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উচ্চ শুল্কের বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত।

উভয় দেশ এখনো একে অপরের পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করে রেখেছে।

এই বাণিজ্য যুদ্ধ কবে থামবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

আগামী আগস্টে এই বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিপ ডিজাইন সফটওয়্যারের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারতো, কারণ নতুন মাইক্রোচিপ তৈরির জন্য এই সফটওয়্যার অপরিহার্য।

উল্লেখ্য, চীনের ইডিএ (ইলেক্ট্রনিক ডিজাইন অটোমেশন) বাজারের ৭০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে এই তিনটি কোম্পানি।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাণিজ্য অংশীদারদের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, চীনের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর শুল্ক বহাল রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশই তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক।

তবে, বিদ্যমান শুল্ক এবং চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল করা এখনো কঠিন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *