প্রকাশ্যে ট্রাম্পের চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত! যা বদলে দেয় নির্বাচনের গতি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী কৌশল নিয়ে নতুন কিছু তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে ট্রাম্পের দল কীভাবে তাদের প্রচারের ধারা পরিবর্তন করেছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেছে।

মূল লক্ষ্য ছিল নির্বাচনে জয়লাভ করা, আর সে কারণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে।

বইটিতে বলা হয়েছে, গর্ভপাতের মতো স্পর্শকাতর একটি ইস্যুতেও ট্রাম্পের দল কৌশলগত পরিবর্তন এনেছিল। তারা বুঝতে পারছিল, এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিলে নির্বাচনে তাদের ক্ষতি হতে পারে।

এছাড়া, ভোটের জন্য পুরুষ ভোটারদের আকৃষ্ট করার দিকেও তারা বিশেষভাবে মনোযোগ দেয়। আগে যেখানে শ্বেতাঙ্গ নারীদের ভোটকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো, সেখানে পুরুষ ভোটারদের মন জয় করতে নতুন পরিকল্পনা করা হয়।

সেই সঙ্গে, আগাম ভোটের (early voting) বিষয়েও তাদের পুরনো ধারণা পাল্টানো হয়।

গর্ভপাত ইস্যুতে ট্রাম্পের দলের কৌশল ছিল বেশ হিসাব-নিকাশ করা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর যখন গর্ভপাতের বিষয়টি রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসে, তখন ট্রাম্পের দল বুঝতে পারে, এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা দরকার।

বিভিন্ন পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয়, একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার পর গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিবর্তে, বিষয়টি রাজ্যগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করা।

দলের অভ্যন্তরীণ একটি উপস্থাপনায় বলা হয়, যদি ট্রাম্প জাতীয় পর্যায়ে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন, তবে এটি নির্বাচনে তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে (যেমন পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিন) গর্ভপাতের বিষয়ে তুলনামূলকভাবে উদার নীতি প্রচলিত রয়েছে।

পুরুষ ভোটারদের মন জয় করার জন্য ট্রাম্পের দল নতুন একটি কৌশল গ্রহণ করে। তারা আগের নির্বাচনগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখে, শ্বেতাঙ্গ পুরুষ ভোটারদের মধ্যে তাদের সমর্থন কমে গিয়েছিল।

তাই, তারা সিদ্ধান্ত নেয়, মূলধারার গণমাধ্যম থেকে দূরে থাকা পুরুষ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে হবে। এর অংশ হিসেবে, তারা বিভিন্ন পডকাস্ট এবং পুরুষ-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। এই কৌশলের ফলে তারা বিভিন্ন শ্রেণির ভোটারদের মধ্যে সমর্থন বাড়াতে সক্ষম হয়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ছিল আগাম ভোট (early voting) নিয়ে ট্রাম্পের দলের অবস্থান। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আগাম ভোটকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ‘দুর্নীতিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

কিন্তু নির্বাচনে জেতার জন্য এবার তিনি তার এই ধারণা পরিবর্তন করেন। দলের উপদেষ্টারা তাকে বোঝান, আগাম ভোটের মাধ্যমে যারা ভোট দেবেন, তারা মূলত ট্রাম্পের সমর্থক।

তাই, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। এরপর ট্রাম্প তার দলের কর্মীদের ‘টু বিগ টু রিগ’ (Too Big to Rig) শ্লোগান ব্যবহার করার নির্দেশ দেন এবং আগাম ভোট দেওয়ার প্রচার শুরু করেন।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি (RNC)-এর অভ্যন্তরেও কিছু পরিবর্তন আসে। ট্রাম্পের সমর্থকরা জানতে চান, দলের কর্মীরা ২০২০ সালের নির্বাচনকে বৈধ মনে করেন কিনা।

এছাড়া, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও পরিবর্তন আনা হয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *