ট্রাম্পের নতুন কীর্তি: আমেরিকার নায়কদের বাগান?

ট্রাম্পের স্বপ্নের ‘গার্ডেন অফ হিরোস’: বিপুল ব্যয়ে সাফল্যের চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি স্বপ্নের প্রকল্প হলো ‘ন্যাশনাল গার্ডেন অফ আমেরিকান হিরোস’ বা ‘আমেরিকান বীরদের জাতীয় উদ্যান’। বিশাল এই ভাস্কর্য উদ্যানে স্থাপন করা হবে ২৫০ জন খ্যাতনামা মার্কিনির মূর্তি।

২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার আড়াইশো বছর পূর্তি উপলক্ষে এই উদ্যানটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিপুল অর্থ খরচ ও সময় স্বল্পতার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

২০২০ সালে মাউন্ট রাশমোরের পাদদেশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি এমন একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করতে চান, যেখানে আমেরিকার ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের মূর্তি স্থাপন করা হবে। কোবে ব্রায়ান্ট, অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট, আব্রাহাম লিংকন, মোহাম্মদ আলী, ক্রিস্টোফার কলম্বাস, স্যালি রাইডসহ আরও অনেকের মূর্তি সেখানে স্থাপন করার কথা রয়েছে।

প্রকল্পটি নিয়ে এরই মধ্যে শিল্পী মহলে কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে এই উদ্যান তৈরির প্রস্তাবও এসেছে। তবে সময়মতো কাজ শেষ করা এবং এর গুণগত মান বজায় রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, মূর্তিগুলোর জন্য শিল্পী নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্মাণের সময়সীমা খুবই কম।

প্রতিটি মূর্তির জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ২ লাখ মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বিশাল আকারের শিল্পকর্ম তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।

যেখানে নির্মাণ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে উপাদান সংগ্রহ—সবকিছুতেই রয়েছে জটিলতা। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্লাসিক শৈলীতে মূর্তিগুলো তৈরি করতে হবে।

এর জন্য শিল্পী নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রস্তাবিত মূর্তিগুলোর উচ্চতা হতে হবে প্রায় ৬ থেকে সাড়ে আট ফুটের মধ্যে।

এই প্রকল্পের জন্য শিল্পী নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। আবেদনকারীদের জন্য কঠিন কিছু শর্তও আরোপ করা হয়েছে। আবেদনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে এবং তাদের ছাত্র ঋণ, কর ও সন্তানের ভরণপোষণের মতো বকেয়া পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

শিল্পকর্ম প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট এবং সময়সীমা অনেক শিল্পীর কাছেই যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। কারণ, ভালো মানের শিল্পকর্ম তৈরি করতে সাধারণত অনেক বেশি সময় ও অর্থ প্রয়োজন হয়।

প্রকল্পের স্থান নির্বাচন নিয়েও চলছে আলোচনা। সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্য এই উদ্যান নির্মাণের জন্য সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও কংগ্রেস সদস্যরা হোয়াইট হাউসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী, মাউন্ট রাশমোরের কাছে প্রায় ৪০ একর জমির ওপর এই উদ্যান তৈরি করা হতে পারে।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রশ্ন হলো, এই প্রকল্প কতটা সফল হবে? ট্রাম্পের এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কতটা আকর্ষণীয়তা পাবে, তা সময়ই বলবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *