আজকাল জীবনযাত্রার নানান চাপে ঘাড় এবং কাঁধে ব্যথার সমস্যা বাড়ছে। কাজের চাপ, পারিবারিক উদ্বেগ অথবা অন্য কোনো কারণে মানসিক চাপ হলে, আমাদের শরীরের পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
এই ব্যথা অনেক সময় তীব্র আকার ধারণ করে এবং দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে।
আসলে, যখন আমরা কোনো মানসিক চাপের মধ্যে থাকি, তখন শরীর ‘ফাইট-অর-ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সাড়া দেয়।
এই প্রক্রিয়ায় শরীরের পেশিগুলো সংকুচিত হয়, যা ঘাড় ও কাঁধের পেশিতে টান সৃষ্টি করে। দীর্ঘকাল ধরে মানসিক চাপ থাকলে, এই টান দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং তা থেকে তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা এমনকি ঘুমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
কিন্তু কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
নিয়মিত কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম, যোগাভ্যাস এবং বিশ্রাম নেওয়ার মাধ্যমে ঘাড় ও কাঁধের পেশীর টান কমিয়ে আনা সম্ভব। নিচে এমন কয়েকটি ব্যায়ামের কথা আলোচনা করা হলো:
- ঘাড়ের স্ট্রেচ (Neck stretch): এই ব্যায়াম ঘাড়ের পেশীকে প্রসারিত করে এবং ঘাড়ের নড়াচড়ার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ঘাড়ের মুক্তি (Neck release): এই ব্যায়াম ঘাড় ও কাঁধের পেশীর টান কমাতে সহায়ক।
- শিশুদের ভঙ্গি (Child’s Pose বা বালসানা): যোগের এই ভঙ্গি ঘাড়ের ব্যথা কমাতে খুবই উপযোগী। এটি মানসিক চাপ কমিয়ে শরীরকে শান্ত করতে সাহায্য করে এবং ঘুমের উন্নতি ঘটায়।
- বিড়ালের ভঙ্গি ও গরুর ভঙ্গি (Cat-Cow Pose বা চক্রবাকাসন): এই আসনে পিঠ, কোমর ও ঘাড়ের পেশীগুলো প্রসারিত হয়, যা শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- সূঁচের মধ্যে সুতা প্রবেশ করানো (Thread the needle): এই ব্যায়াম ঘাড়, কাঁধ এবং পিঠের পেশী শিথিল করতে সহায়ক।
উপরের ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে ঘাড় ও কাঁধের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
যোগাভ্যাস এবং অন্যান্য রিলাক্সেশন টেকনিকও এক্ষেত্রে বেশ উপকারী। মানসিক চাপ কমাতে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ধ্যানও খুবই কার্যকর।
তবে, যদি আপনার ঘাড় ও কাঁধের ব্যথা তীব্র হয় বা কিছুতেই না কমে, তবে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কোনো শারীরিক সমস্যা হলে, দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। স্বাস্থ্য বিষয়ক যেকোনো সমস্যা সমাধানে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।
মনে রাখতে হবে, শরীরের ওপর মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের প্রভাব অনেক।
তাই শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া, পর্যাপ্ত ঘুমোনো এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই জরুরি। সুস্থ জীবন যাপনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন