ফ্রান্সে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের ধর্মঘটের কারণে দেশটির আকাশপথে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। গ্রীষ্মের ছুটির মরসুমে হাজার হাজার যাত্রী তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা নতুন করে সাজাতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ কর্মীরা ভালো কাজের পরিবেশ এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
শুক্রবার প্যারিসের সকল বিমানবন্দরে প্রায় ৪০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকেই ফ্রান্সের বিমানবন্দরগুলোতে এই ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কর্তৃপক্ষ বিমান সংস্থাগুলোকে প্যারিসের শার্ল দ্য গোল, ওরলি এবং বোভে বিমানবন্দরে শুক্রবার ৪০ শতাংশ, নিস বিমানবন্দরে ৫০ শতাংশ এবং মার্সেই ও লিওঁ সহ অন্যান্য কয়েকটি শহরে ৩০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
এরপরেও দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, “ফ্রান্সের সকল বিমানবন্দরে বিলম্ব এবং বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
এই ধর্মঘটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাজেট এয়ারলাইন্স রায়ানএয়ার। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার ফলে ৭০,০০০ যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রায়ানএয়ারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ধর্মঘটের কারণে তাদের ফ্রান্সের আকাশপথের সকল ফ্লাইট, সেইসাথে ফ্রান্সের বিমানবন্দর থেকে যাওয়া ও আসার ফ্লাইটগুলোতেও প্রভাব পড়েছে। এমতাবস্থায়, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিমান চলাচল সংক্রান্ত নিয়মাবলী সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
ধর্মঘটে নেতৃত্বদানকারী একটি শ্রমিক সংগঠন, ইউএনএসএ-আইসিএনএ (UNSA-ICNA), এক বিবৃতিতে বলেছে যে বর্তমানে আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল। এছাড়াও, তারা কর্মীদের বেতন-ভাতা মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেছে।
সম্প্রতি বোর্দোর বিমানবন্দরে একটি দুর্ঘটনার উপক্রম হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মীদের কাজের ওপর নজরদারি বাড়ানোর যে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তারও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা।
ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রী ফিলিপ টাবারো এই ধর্মঘটের তীব্র নিন্দা করে একে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন। বিশেষ করে যখন ফরাসি স্কুলগুলো গ্রীষ্মের ছুটিতে যাচ্ছে এবং বহু পরিবার তাদের অবকাশ যাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এই ধর্মঘটকে তিনি ভালোভাবে দেখছেন না।
এর ফলস্বরূপ, অনেক যাত্রীকেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
এই ধর্মঘটের কারণে ফ্রান্সে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি এবং যারা ভ্রমণের পরিকল্পনা করছিলেন, তারা সমস্যায় পড়েছেন। গ্রীষ্মের এই সময়ে অনেকেই পরিবার পরিজনের সঙ্গে দেখা করতে অথবা ছুটি কাটাতে ফ্রান্সে যান।
ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বের কারণে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস