চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক চীনা চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিক্রিয়ায় চীনও ইউরোপীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
চীনের এই সিদ্ধান্তের ফলে, এখন থেকে সরকারি ক্রয়ের জন্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো পণ্য সরবরাহ করতে পারবে না, যদি চুক্তির মূল্যমান ৪৫ মিলিয়ন ইউয়ানের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকার বেশি) হয়।
রবিবার চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানায়। তবে, যেসব ইউরোপীয় কোম্পানি এরই মধ্যে চীনে বিনিয়োগ করেছে এবং সেখানেই পণ্য উৎপাদন করছে, তাদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
সম্প্রতি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জবাবে চীনও ইউরোপীয় ব্রান্ডির ওপর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল ফ্রান্স থেকে আসা কগন্যাক।
শুধু তাই নয়, চীন ইউরোপীয় শূকর ও দুগ্ধজাত পণ্যের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে, গত জুনে, ইইউ ঘোষণা করে যে তারা সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে চীনা কোম্পানিগুলোকে ৫ মিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬১ কোটি টাকার বেশি) বেশি মূল্যের কোনো কাজ দেবে না।
ইইউ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা চীনের বাজারে তাদের কোম্পানিগুলোর প্রবেশে বিদ্যমান ‘বাধা’ দূর করতে চাইছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মতে, চীন আলোচনার মাধ্যমে ইইউ’র সঙ্গে এই সমস্যা সমাধানে আগ্রহী ছিল।
তবে ইইউ, চীনের ‘সদিচ্ছা’কে উপেক্ষা করে বাণিজ্য বিধিনিষেধ আরোপ অব্যাহত রেখেছে। মুখপাত্র আরও জানান, চীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন ও ইইউ’র মধ্যে এই বাণিজ্য বিরোধ বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং অর্থনীতিও এই ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কারণ, চীন ও ইইউ উভয়ই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিকভাবে সতর্ক থাকা জরুরি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস