ভয়ঙ্কর! আকাশে ১১ মাইল, জেগে উঠলো ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি!

ইন্দোনেশিয়ার একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, মাউন্ট লেওটোবি লাকি লাকি, সোমবার আবারও বিস্ফোরিত হয়েছে। এই অগ্নুৎপাতের ফলে আকাশে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ছাই ও অগ্ন্যুৎপাত হওয়া পদার্থ ছড়িয়ে পরেছে।

এর ফলে গ্রামের উপর ছাইয়ের স্তর জমেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আগ্নেয়গিরিটি গত মাস থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক স্তরে ছিল।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। দেশটির ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের সময় আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উত্তপ্ত গ্যাস, পাথর ও লাভা মিশ্রিত হয়ে নেমে আসে।

ড্রোন থেকে পাওয়া চিত্র অনুযায়ী, লাভা গিয়ে আগ্নেয়গিরির মুখ ভরাট করে ফেলেছে, যা ম্যাগমার গভীর সঞ্চালনের ইঙ্গিত দেয় এবং এর ফলে ভূমিকম্পও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের অগ্ন্যুৎপাতটি নভেম্বরের ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের মতোই মারাত্মক ছিল। নভেম্বরের সেই অগ্ন্যুৎপাতে ৯ জন নিহত হয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন অনেকে।

এছাড়াও, গত মার্চ মাসেও এখানে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। ভূতাত্ত্বিক সংস্থার প্রধান, মোহাম্মদ ওয়াহিদ, সুইজারল্যান্ডে একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়ে জানান, “এ ধরনের বড় আকারের অগ্ন্যুৎপাত অবশ্যই উদ্বেগের কারণ।

এর ফলে বিমান চলাচলে সমস্যা হতে পারে। আমরা খুব শীঘ্রই বিপদগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে গ্রামবাসীদের এবং পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নেব।

মাউন্ট লেওটোবি লাকি লাকির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ১৮ই জুন থেকে সতর্কতা বেড়ে সর্বোচ্চ করা হয়। এরপরে, অগ্ন্যুৎপাতের ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যাওয়ায় ৭ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের একটি এলাকাকে বিপদজনক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

গত বছর এখানে অগ্ন্যুৎপাতের পর প্রায় ৬,৫০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং ফ্রানস সেডা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর থেকে এই বিমানবন্দরের কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে, কারণ সেখানে এখনো ভূমিকম্পন চলছে। ১,৫৮৪ মিটার উঁচু এই আগ্নেয়গিরিটি ফ্লোরেস টিমুর জেলার মাউন্ট লেওটোবি পেরেম্পুয়ান-এর সাথে একটি যমজ আগ্নেয়গিরি।

ইন্দোনেশিয়া ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ, যেখানে প্রায়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটে। দেশটিতে ১২০টিরও বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে।

এটি “রিং অফ ফায়ার” নামে পরিচিত একটি অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত, যা প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে থাকা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। ২০১০ সালে মাউন্ট মেরাপিতে হওয়া ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতে ৩৫৩ জন মারা গিয়েছিল এবং সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *