ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে এবার মুখ খুলছে ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালত। নেদারল্যান্ডস এবং ইউক্রেনের দায়ের করা মামলার রায় দিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত (ইসিএইচআর)। এই রায়ে ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনে চলা যুদ্ধ এবং মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ-১৭ ভূপাতিত করার ঘটনায় রাশিয়ার দায়বদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
খবরটি আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জেরে মস্কোকে কাউন্সিল অব ইউরোপ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই কারণে, আদালতের এই রায় মূলত প্রতীকী তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
তবে, এমএইচ-১৭ বিমান দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
২০১৪ সালের ১৭ জুলাই, আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরগামী বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়ার তৈরি একটি ‘বুক’ ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বিমানটি ভূপাতিত করা হয়, যা সে সময় বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করত।
এই দুর্ঘটনায় ২৯৮ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন ১৯২ জন ডাচ নাগরিক। জাতিসংঘের বিমান চলাচল সংস্থা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে।
ইসিএইচআর হলো ইউরোপের মানবাধিকার রক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অব ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদিও রাশিয়াকে এই সংস্থা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তবুও আদালত এখনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর বিচার করতে পারে, যা বহিষ্কারের আগের সময়ের ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত।
আদালতের এই রায় ছাড়াও, নেদারল্যান্ডসে এমএইচ-১৭ ভূপাতিত করার ঘটনায় জড়িত দুই রাশিয়ান ও এক ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীকে দোষী সাব্যস্ত করে একটি ফৌজদারি মামলা চলছে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (International Court of Justice) রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও, রাশিয়া তা মানতে অস্বীকার করেছে।
সম্প্রতি, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণের জন্য একটি নতুন আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।
এই ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এখনও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মতে, এই লড়াই বন্ধ করাটাই হবে সবচেয়ে খারাপ কাজ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস