আফ্রিকার শিশুদের জীবন বাঁচাতে আসছে নতুন একটি ওষুধ, যা ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। সুইস ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা নোভার্টিস ঘোষণা করেছে যে, তারা শিশুদের জন্য তৈরি করা প্রথম ম্যালেরিয়ার ওষুধ “কোয়ারটেম বেবি” (Coartem Baby) খুব শীঘ্রই আফ্রিকার দেশগুলোতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।
এই ওষুধটি বিশেষভাবে নবজাতক এবং কম ওজনের শিশুদের (২ থেকে ৫ কিলোগ্রাম) জন্য তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এবং এর কারণে প্রায় ৫ লক্ষ ৯৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের বেশিরভাগই ছিল আফ্রিকার মানুষ। আর এই মৃত্যুর একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা।
এতদিন পর্যন্ত শিশুদের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় বয়স্কদের জন্য তৈরি করা ওষুধ ব্যবহার করা হতো, যা অনেক সময় শিশুদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারত। কোয়ারটেম বেবি সেই সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে।
ইতিমধ্যে, এই ওষুধটি সুইজারল্যান্ডে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে এবং ঘানাতেও এর অনুমোদন পাওয়া গেছে।
নোভার্টিস আশা করছে যে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বুরকিনা ফাসো, কোত দিভোয়ার, কেনিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডাসহ আরও আটটি আফ্রিকান দেশে ওষুধটি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে।
এই দেশগুলোও ওষুধটি মূল্যায়নে সহযোগিতা করেছে।
নোভার্টিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস নরসিমহান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “নবজাতক ও শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এই ওষুধ, সবচেয়ে দুর্বল শিশুদেরও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।”
ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা খুব শীঘ্রই আফ্রিকার দেশগুলোতে এটি সরবরাহ করতে শুরু করবে এবং এক্ষেত্রে তাদের মুনাফার পরিমাণ কম থাকবে।
ওষুধটি তৈরি হয়েছে মেডিসিনস ফর ম্যালেরিয়া ভেঞ্চার (MMV) নামক একটি অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে নোভার্টিসের যৌথ উদ্যোগে।
এমএমভির প্রধান নির্বাহী মার্টিন ফিচেট বলেছেন, “কোয়ারটেম বেবির অনুমোদন ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে শিশুদের জন্য সঠিক ডোজের ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।”
যদিও এই ওষুধটি বর্তমানে আফ্রিকার শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তবে এটি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যখাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
ভবিষ্যতে, এটি বাংলাদেশের শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: CNN