শিরোনাম: স্ত্রীকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার অভিযোগে ডেন্টিস্ট, বিচারের মুখোমুখি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে এক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার শুনানির প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ডেন্টিস্ট জেমস ক্রেইগ তার স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ক্রেইগকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন এবং এবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনায় হতবাক করার মতো তথ্য উঠে এসেছে।
অ্যাঞ্জেলা ক্রেইগ নামের ওই নারীর মৃত্যুরহস্যের শুরুটা হয় তীব্র মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা নিয়ে। ঘটনার কয়েকদিন আগে তিনি কয়েকবার হাসপাতালে যান, কিন্তু চিকিৎসকরা তার অসুস্থতার কারণ খুঁজে বের করতে পারছিলেন না। হাসপাতালে ভর্তির সময় তিনি তার স্বামীকে জানান, সকালের নাস্তার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। আদালতে পেশ করা নথি অনুযায়ী, এর কয়েকদিন পরই তিনি কোমায় চলে যান এবং ২০২৩ সালের ১৮ই মার্চ তার মৃত্যু হয়।
অভিযোগপত্রে, জেমস ক্রেইগের বিরুদ্ধে হত্যার প্রমাণ হিসেবে সাক্ষী ও বিভিন্ন টেক্সট মেসেজের স্ক্রিনশট, ইন্টারনেট সার্চের ইতিহাস, এবং বিষাক্ত দ্রব্য কেনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি, স্ত্রীর মৃত্যুর আগে অন্য এক নারীর সঙ্গে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, অ্যাঞ্জেলার মৃত্যুর আগে জেমস ক্রেইগ অনলাইনে বিষাক্ত পদার্থ কেনার চেষ্টা করেছিলেন। তার ডেন্টাল পার্টনার রায়ান রেডফার্ন প্রথম কর্তৃপক্ষের কাছে খবর দেন যে অ্যাঞ্জেলাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। রেডফার্নের সহকর্মীর মাধ্যমে জানা যায়, জেমস ক্রেইগ তার অফিসে পটাশিয়াম সায়ানাইডের একটি চালান এনেছিলেন।
তদন্তকারীরা ক্রেইগের একটি ইমেল অ্যাকাউন্ট খুঁজে পান, যা শুধুমাত্র তার ডেন্টাল অফিসের কম্পিউটার থেকে ব্যবহার করা হতো। সেই অ্যাকাউন্টে বিষ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, যেমন – ‘কত গ্রাম আর্সেনিক খেলে একজন মানুষ মারা যেতে পারে’ অথবা ‘অটোপসিতে আর্সেনিক সনাক্ত করা যায় কিনা’ ইত্যাদি সার্চ করা হয়েছিল। এছাড়াও, ইউটিউবে ‘কিভাবে বিষ তৈরি করা যায়’ বিষয়ক ভিডিও দেখার প্রমাণও পাওয়া গেছে।
তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, ক্রেইগ টেক্সাসের কারিন কেইন নামের এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন। অ্যাঞ্জেলা হাসপাতালে থাকাকালীন কেইন কলোরাডোতে এসে ক্রেইগের সঙ্গে দেখা করেন।
এই মামলার শুনানির আগে অভিযুক্ত জেমস ক্রেইগ বেশ কয়েকজন আইনজীবী পরিবর্তন করেছেন। এমনকি, তিনি জেল থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ক্রেইগ অপর এক কয়েদিকে প্রধান তদন্তকারী ববি ওলসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার জন্য রাজি করাতে চেয়েছিলেন। এছাড়া তিনি অ্যাঞ্জেলার বন্ধু কাজানি কনস্টান্টিনিডিসকে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
যদি ক্রেইগকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তবে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন