ছোট্ট মানুষ সিন্ড্রোম: উচ্চতা নিয়ে হীনমন্যতা ও আগ্রাসী আচরণ – কারণ ও প্রভাব।
পুরুষদের মধ্যে উচ্চতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সমাজে যা অনেক সময় তাদের ব্যক্তিত্বের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু কম উচ্চতার কারণে অনেক পুরুষ হীনমন্যতায় ভোগেন এবং নিজেদের প্রমাণ করতে গিয়ে আগ্রাসী বা কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠেন।
মনোবিজ্ঞানীরা এই প্রবণতাকে ‘ছোট্ট মানুষ সিন্ড্রোম’ বা নেপোলিয়ন কমপ্লেক্স নামে অভিহিত করেন।
আসলে, ‘ছোট্ট মানুষ সিন্ড্রোম’ কোনো রোগ বা চিকিৎসাযোগ্য বিষয় নয়। এটি একটি সামাজিক ধারণা যা পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কম উচ্চতার কারণে অনেক পুরুষ মনে করেন, তাদের দুর্বল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর থেকে মুক্তি পেতে তারা সমাজে নিজেদের প্রভাবশালী প্রমাণ করতে চান, যা তাদের মধ্যে আগ্রাসী মনোভাব তৈরি করে।
এই সিন্ড্রোমের শিকার ব্যক্তিরা প্রায়ই আত্মবিশ্বাসের অভাব, সামাজিক উদ্বেগ এবং হতাশায় ভোগেন। তারা সবসময় অন্যদের থেকে নিজেদের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে চান এবং সামান্য বিষয়েও উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তারা সন্দেহপ্রবণ ও নিয়ন্ত্রণকামী হয়ে উঠতে পারেন।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই ধরনের আচরণ পুরুষদের মধ্যে বিদ্যমান ‘পুরুষত্বের ভুল ধারণা’ থেকে আসে।
সমাজে পুরুষদের সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, যেমন- পুরুষত্ব মানেই কঠোর হতে হবে, শক্তিশালী হতে হবে এবং সবসময় জয়ী হতে হবে। এই ধরনের ধারণাগুলো পুরুষদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং তাদের আগ্রাসী করে তোলে।
২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের বডি ইমেজ বা শারীরিক গঠন বিষয়ক উদ্বেগের কারণে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরও বাড়ে। তাই, ‘ছোট্ট মানুষ সিন্ড্রোম’-এর ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।
মনে রাখতে হবে, শারীরিক গঠন কোনো মানুষের চরিত্র নির্ধারণ করে না। কোনো ব্যক্তি যদি হীনমন্যতায় ভোগেন, তবে তার আগ্রাসী আচরণ বা অন্যকে ছোট করে দেখার কোনো অধিকার নেই।
এই ধরনের আচরণ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
সমাজের প্রতিটি মানুষের উচিত, পুরুষত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা তৈরি করা এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া। কোনো মানুষের দুর্বলতা নিয়ে হাসাহাসি না করে, বরং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন