রেকর্ড! ৮৬ কোটি ইউরোতে বিক্রি বিরকিন, হতবাক ফ্যাশন দুনিয়া

**বিরল বিরকিন ব্যাগ নিলামে আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য ১৩০ কোটি টাকার বেশি**

বিশ্বের ফ্যাশন দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে, প্রয়াত অভিনেত্রী ও সঙ্গীতশিল্পী জেন বারকিনের আসল হার্মিস বিরকিন ব্যাগটি প্যারিসে এক নিলামে রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। ব্যাগটি তৈরি হয়েছিল একটি উড়োজাহাজের অসুস্থতাজনিত বর্জ্য ফেলার ব্যাগের ওপর আঁকা নকশা থেকে।

বৃহস্পতিবারের নিলামে এটির দাম উঠেছে ৮.৬ মিলিয়ন ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩০ কোটি টাকার বেশি। ফ্যাশন ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া কোনো বস্তু।

**কেন এই ব্যাগ এত মূল্যবান?**

এই বিরল হ্যান্ডব্যাগটির জন্ম হয় ১৯৮০-এর দশকে, যখন জেন বারকিন হার্মিসের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী জ্যাঁ-লুই দ্যুমার সঙ্গে এক বিমানে দেখা করেন। বারকিন জানান, তিনি এমন একটি ব্যাগ চান যেখানে তার প্রয়োজনীয় সবকিছু রাখা যাবে।

এরপরই দ্যুমার অনুরোধে, বারকিন একটি অসুস্থতাজনিত বর্জ্য ফেলার ব্যাগের ওপর নিজের ডিজাইন করেন। সেই ডিজাইন অনুসারেই তৈরি হয় এই বিরল ব্যাগটি।

এই ব্যাগের বিশেষত্ব হলো, এটি জেন বারকিনের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এবং এর ডিজাইন ছিল খুবই স্বতন্ত্র। এই ব্যাগে ছিল কাঁধের একটি ফিতা, যা অন্যান্য বিরকিন ব্যাগে সাধারণত দেখা যায় না।

এছাড়াও, এতে বারকিনের নখ কাটার একটি ক্লিপও যুক্ত করা হয়েছিল। এই ব্যাগের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হার্মিস।

নিলামে ওঠা এই ব্যাগটি ছিল কালো চামড়ার তৈরি এবং এর সামনে বারকিনের নামের আদ্যক্ষর ‘J.B.’ খোদাই করা ছিল। এই ব্যাগের ডিজাইন এবং এর পেছনের গল্প এটিকে ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

**নিলামের বিবরণ**

প্যারিসের নিলাম কক্ষে যখন ব্যাগটির নিলাম শুরু হয়, তখন সবার মধ্যেই উত্তেজনা ছিল। নিলামকারী জানান, এই ব্যাগটি “সম্পূর্ণ অনন্য” এবং “সর্বকালের সেরা ব্যাগ”।

নিলামে শুরুতে দাম উঠেছিল ১ মিলিয়ন ইউরো। এরপর দ্রুত বাড়তে থাকে দাম, যা কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যায় ৭ মিলিয়ন ইউরোতে।

জাপানের একজন সংগ্রাহক এই ব্যাগটি কিনে নেন।

এই নিলামে জয়ী হওয়ার পর, অনেকেই বলছেন, বিরকিন ব্যাগ কেবল একটি সাধারণ হ্যান্ডব্যাগ নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক প্রতীক।

**জেন বারকিন: ফ্যাশন এবং সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র**

জেন বারকিন ছিলেন একজন ব্রিটিশ অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী এবং ফ্যাশন আইকন। ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে তাঁর স্বতন্ত্র ফ্যাশন, যেমন – লম্বা চুল, সাদা টপস ও জিন্স-এর সঙ্গে ঝুড়ি ব্যাগ, নারীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

বারকিন তাঁর রুচিশীল ফ্যাশন এবং অভিনয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ক একটি তথ্যচিত্রেও অংশ নিয়েছিলেন।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ বিতরণেও তিনি সহায়তা করেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *