আর্টের এক নতুন দিগন্ত: কিউবার অর্থনৈতিক সংকটে নখ শিল্পের হাতছানি।
অর্থনৈতিক সংকট যেন এক কঠিন বাস্তব, যেখানে জীবন ধারণের প্রতিটি পদক্ষেপই কঠিন হয়ে পড়ে। কিউবার নারীরা সেই কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও খুঁজে নিচ্ছেন বাঁচার অন্য এক পথ। তারা নিজেদের সৌন্দর্য চর্চার মাধ্যমে, নখ শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন তাদের আত্মপ্রকাশের এক নতুন রূপ।
কিউবার রাস্তায় এখন সাজানো নখ যেন এক ফ্যাশন স্টেটমেন্ট, যা অর্থনৈতিক দুরবস্থার মাঝেও নারীদের মনে জোগাচ্ছে আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া।
মারিসেল দারিয়া ভালদেসের মতো অনেক শিল্পী আছেন যারা এই নখ শিল্পকে কেবল ফ্যাশন হিসেবে নয়, বরং শিল্পের একটি রূপ হিসেবে দেখেন। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে জটিল নকশা তৈরি করেন। এই নকশাগুলোর খরচ প্রায় ৪০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে, যা কিউবার একজন মানুষের গড় মাসিক আয়ের তিন গুণেরও বেশি।
এই নখ শিল্পের জগৎ এখন কিউবার নারীদের কাছে এক নতুন আশ্রয়স্থল। হাভানার রাস্তায়, বাড়ির উঠোনে অথবা ছোট ছোট সেলুনে, যেখানে এই শিল্পীরা তাদের কাজ করেন, সেখানে নারীদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। কেউ আসছেন পছন্দের ডিজাইন করাতে, আবার কেউ আসছেন তাদের নখের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে। কেউ তাদের ব্যস্ত দিনের শেষে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার কারো কাছে এটা আত্মপ্রকাশের অন্যতম মাধ্যম।
দিনের আলোয় কাপড় শুকাতে যাওয়া ইয়ালেমা গনজালেজের নখে শোভা পাচ্ছে আকর্ষণীয় ডিজাইন। মায়তে হেরনান্দেজ সবজি বিক্রেতার কাছ থেকে খুচরা নিচ্ছেন, তার নখেও সেই একই উজ্জ্বলতা। মারিয়াম ক্যামিলা সোসা তার নতুন করা নখের ছবি তুলে পোজ দিচ্ছেন, যেন এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন।
এই নখ শিল্পের বিস্তার কিউবার নারীদের সৃজনশীলতা এবং টিকে থাকার মানসিকতার প্রমাণ। তারা একদিকে যেমন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন, তেমনই নিজেদের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন এই শিল্পের মাধ্যমে।
এই শিল্পের পেছনে রয়েছে তাদের আত্মবিশ্বাস, যা তাদের জীবনে নতুন রং যোগ করে।
বাংলাদেশেও এখন নখ শিল্পের চাহিদা বাড়ছে, যা ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কিউবার নারীদের এই নখ শিল্পের গল্প যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মানুষ তার সৌন্দর্য ও সৃজনশীলতাকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস