গত মাসে ভারতের এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত ২৬০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহমেদাবাদে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, যেখানে যাত্রী ও ক্রুসহ ১৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হন।
সম্প্রতি প্রকাশিত প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্তে জানা গেছে, বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই এর ইঞ্জিনগুলোতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিমানের ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণের পর, ভারতীয় বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) নিশ্চিত করেছে যে, দুর্ঘটনার কয়েক মুহূর্ত আগে বিমানের ইঞ্জিন চালু রাখার সুইচ ‘রান’ অবস্থা থেকে ‘কাটঅফ’ অবস্থানে নেওয়া হয়েছিল।
এই পরিবর্তনের ফলে উভয় ইঞ্জিনই জ্বালানি সরবরাহ থেকে বঞ্চিত হয় এবং এর ফলেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায়।
প্রতিবেদন আরও উল্লেখ করেছে, ককপিটে থাকা পাইলটরা এই সুইচ পরিবর্তনের কারণ নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। দুর্ঘটনার পূর্ব মুহূর্তে, একজন পাইলট অন্যকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করলেন।
জবাবে অন্য পাইলট জানান, তিনি এমনটি করেননি। বিমানের কন্ঠস্বর রেকর্ডারে পাইলটদের মধ্যে এই বিভ্রান্তিমূলক কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে। সম্ভবত এই কারণেও পরিস্থিতি দ্রুত আরও খারাপের দিকে যায়।
বিমানটিতে মোট ২৩০ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডার নাগরিক ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় বিমানের আরোহীদের মধ্যে একজন যাত্রী জীবিত ছিলেন।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এএআইবি’র তদন্ত এখনো চলছে।
এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে তাদের বোয়িং ৭87-8 ড্রিমলাইনার বিমানের বহরের নিরাপত্তা আরও নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যায়।
প্রাথমিক তদন্তে বিমানের কারিগরি ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করা হলেও, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো অজানা। এএআইবি’র চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরেই দুর্ঘটনার আসল কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
তথ্য সূত্র: এ্যাসোসিয়েটেড প্রেস