**টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা: মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, উদ্ধার অভিযান চলছে**
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের পার্বত্য অঞ্চলে গত সপ্তাহে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা আঘাত হানে, যার ফলে বহু মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৪ঠা জুলাই স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে হওয়া এই বন্যায় কেরি ও ক্যান্ডাল কাউন্টি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভয়াবহ এই বন্যায় এরই মধ্যে ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে গুয়াদালেপ নদী ফুলেফেঁপে ওঠে এবং এর আশেপাশে বসবাসকারী জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরে। মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে নদীর জলস্তর প্রায় ৩০ ফুটে পৌঁছায়।
আকস্মিক বন্যায় বাড়িঘর, গাড়ী এবং ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডগুলো পানির তোড়ে ভেসে যায়। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটানোর জন্য আসা শিশুদের কয়েকটি ক্যাম্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার পরও অনেক পরিবার সময় মতো সতর্ক হতে পারেনি। অনেকেই তখন গভীর ঘুমে ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা ভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাতের শব্দে ভীত হয়ে পড়েন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (NWS) বন্যার পূর্বাভাস দিলেও অনেক ক্ষেত্রে তা সময় মতো মানুষের কাছে পৌঁছায়নি।
জরুরি অবস্থার অ্যালার্ট সিস্টেম ‘কোড রেড’-এর মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করার কথা থাকলেও, অনেক ক্ষেত্রে তা পাওয়া যায়নি।
কোনো কোনো এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা ঘটনার অনেক পরে সতর্কবার্তা পেয়েছেন।
কেরিভিলে বসবাসকারী লরেনা গুইলেন জানান, তিনি তার রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার পর দেখেন নদীর জল বাড়ছে।
তিনি জরুরি বিভাগে ফোন করে তার আরভি পার্কের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাকে আশ্বস্ত করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উদ্ধারকারী দল পৌঁছে যায়।
ক্যাম্প মিস্টিকের এক কর্মী জানান, বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্রগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় বৃষ্টির পরিমাণ সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।
ক্যাম্পের অনেক শিশু ও কর্মী বন্যায় আটকা পরে। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, উদ্ধারকারীরা দ্রুত কাজ শুরু করলেও নদীর জলস্তর এত দ্রুত বেড়েছিল যে অনেক ক্ষেত্রে তাদেরও বেগ পেতে হয়েছে।
বর্তমানে উদ্ধারকর্মীরা নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টেক্সাসের এই ভয়াবহ বন্যা সেখানকার মানুষের জন্য এক গভীর শোকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন