মার্কিন কর্মকর্তাদের নিয়ে গভীর উদ্বেগে, এআই’র জাল কলে বাড়ছে প্রতারণা!

**যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নকল করতে এআই-এর ব্যবহার বাড়ছে: সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা**

বর্তমানে প্রযুক্তির চরম উন্নতির যুগে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহারের ঘটনাও বাড়ছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কণ্ঠ নকল করে প্রতারণার ঘটনা বেড়েছে, যা সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা বলছেন, কণ্ঠ নকল করার প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় এই ধরনের প্রতারণা এখন “নতুন স্বাভাবিকতা”-য় পরিণত হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি উইলস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কণ্ঠ নকল করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।

এআই ব্যবহার করে, খুব অল্প সময়ের কণ্ঠস্বর দিয়েই এখন বিশ্বাসযোগ্য ক্লোন তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ১৫ সেকেন্ডের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করেই একজন মানুষের নকল কণ্ঠ তৈরি করা যাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও জানিয়েছেন, তিনি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের নকল করার আরও অনেক চেষ্টা হতে পারে।

তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও ঘটবে। হয়তো আপনাদেরও এমন পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন।” রুবিও আরও জানান, তিনি যখন পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন বিদেশি মন্ত্রীরা তাকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, তিনি তাদের টেক্সট মেসেজ করেছেন কিনা।

জানা গেছে, রুবিওর কণ্ঠ নকল করে অন্তত পাঁচজন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন বিদেশি মন্ত্রী, একজন গভর্নর এবং একজন সিনেটর।

প্রতারক চক্রটি ‘সিগনাল’ মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে ‘marco.rubio@state.gov’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইনে যাদের কণ্ঠস্বর সহজেই পাওয়া যায়, তাদের নকল করা আরও সহজ।

এই ধরনের এআই-চালিত ক্লোন এতটাই নিখুঁত হতে পারে যে, প্রশিক্ষিত ব্যক্তিরাও তাদের দ্বারা প্রতারিত হতে পারেন।

ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক করে জানিয়েছে, তারা যেন তাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হন।

এছাড়াও, তাদের পরিচিতদের এই ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ র‍্যাচেল টোব্যাক বলেন, “সরকারকে এখন গভীর জালিয়াতির মাধ্যমে আক্রমণকারীদের শনাক্ত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

এর জন্য যোগাযোগের অন্য একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে, সংবেদনশীল অনুরোধের আগে পরিচয় যাচাই করা যেতে পারে।”

যদিও এই ঘটনাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটছে, তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এমন এআই-চালিত প্রতারণা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এবং সাধারণ নাগরিকদেরও লক্ষ্য করতে পারে।

তাই, সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *