গাড়ি ঋণ: ট্যাক্স ছাড়ের ঘোষণা, হাজার হাজার টাকা সাশ্রয়ের সুযোগ!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন গাড়ির ঋণগ্রহীতাদের জন্য কর ছাড়ের ঘোষণা এসেছে, যা অনেক ক্রেতাকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এর ফলে গাড়ির বিক্রি বাড়বে কিনা, সেই বিষয়ে রয়েছে ভিন্নমত।

এই আইনটি মূলত দেশটির অভ্যন্তরীণ গাড়ি উৎপাদনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন কর-সংক্রান্ত আইনের অধীনে, গাড়ির ঋণের সুদের ওপর কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে।

এই সুবিধা এমন অনেক মানুষের জন্য উপলব্ধ হবে, যারা সাধারণত তাদের ট্যাক্স ফাইল করার সময় বিভিন্ন বিষয় তালিকাভুক্ত করেন না। তবে এই সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে।

যেমন, গাড়িটি অবশ্যই নতুন হতে হবে এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হতে হবে। এছাড়াও, এই ঋণ চলতি বছর থেকে ইস্যু হতে হবে।

নতুন এই আইনের মূল বিষয়গুলো হলো:

  • এই সুবিধা ২০২৫ সাল থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত পাওয়া যাবে।
  • এই আইনের অধীনে, নতুন আমেরিকান-নির্মিত গাড়ির ঋণের সুদের ওপর বছরে সর্বোচ্চ ১০,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১১ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যাবে।
  • এই সুবিধা গাড়ি, মোটরসাইকেল, স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকেল, মিনিভ্যান, ভ্যান এবং ১৪,০০০ পাউন্ডের কম ওজনের পিকআপ ট্রাকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
  • এই কর ছাড় ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কেনা গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য নয়।

এই ট্যাক্স বেনিফিট থেকে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা উপকৃত হতে পারেন। তবে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, যাদের বার্ষিক আয় ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা) এর মধ্যে, অথবা যৌথভাবে কর প্রদানকারীদের ক্ষেত্রে আয় ২,০০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ২ কোটি ২০ লক্ষ থেকে ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা) এর মধ্যে হলে, তাদের জন্য এই ছাড় সীমিত করা হয়েছে।

এর চেয়ে বেশি আয় যাদের, তারা এই সুবিধা পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর ১ কোটি ৫৯ লক্ষ নতুন হালকা ওজনের গাড়ি বিক্রি হয়েছে।

এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেই। বিভিন্ন হিসাব অনুযায়ী, এই বছর প্রায় ৩৫ লক্ষ নতুন গাড়ির ঋণগ্রহীতা এই ট্যাক্স বেনিফিটের সুবিধা পেতে পারেন।

এই কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়ার জন্য গাড়ির প্রস্তুতকারক কোম্পানির সদর দপ্তর কোথায়, সেটি বিবেচ্য নয়, বরং গাড়িটি কোথায় তৈরি হয়েছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।

উদাহরণস্বরূপ, টেসলার তৈরি হওয়া সব গাড়িই যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসেম্বল করা হয়।

এই ট্যাক্স ছাড়ের ফলে গাড়ির ক্রেতারা বছরে কয়েকশ’ ডলার সাশ্রয় করতে পারেন। সাধারণত, একটি নতুন গাড়ির গড় ঋণ প্রায় ৪৪,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা)।

সুদের হার ক্রেতাদের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে, তাই সাশ্রয়ের পরিমাণও ভিন্ন হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কর নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো, স্থানীয় গাড়ি শিল্পকে উৎসাহিত করা এবং ভোক্তাদের মধ্যে গাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়ানো।

তবে এই ট্যাক্স বেনিফিট গাড়ির বিক্রি বাড়াতে কতটা সহায়তা করবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এই ধরনের কর ছাড় নীতি বাংলাদেশের জন্য সরাসরি প্রযোজ্য না হলেও, এটি অর্থনৈতিক নীতি এবং ভোক্তা আচরণের ক্ষেত্রে কিছু ধারণা দিতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, স্থানীয় শিল্পকে উৎসাহিত করতে এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে সরকার কীভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *