বৃদ্ধদের ট্যাক্স ছাড়: ট্রাম্পের বিলে লুকানো সত্যি!

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ঘোষিত কর ছাড়: একটি পর্যালোচনা।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সম্প্রতি একটি নতুন কর ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে প্রণীত একটি বৃহৎ কর ও ব্যয় প্যাকেজের অংশ হিসেবে এটি এসেছে। তবে, এই ছাড়টি তেমন নয় যা ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এই ঘটনা বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং সরকারের স্বচ্ছতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছে।

নতুন এই নিয়মের অধীনে, প্রবীণ নাগরিকরা তাদের ফেডারেল আয়কর থেকে ২০২৫ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ৬,০০০ ডলার (প্রায় ৬.৫ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত ছাড় পাবেন। যদি কোনো দম্পতি যৌথভাবে তাদের আয়কর জমা দেন, তবে তারা এই সুবিধা দ্বিগুণ অর্থাৎ ১২,০০০ ডলার (প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত পাবেন।

তবে, এই সুবিধা সবার জন্য নয়। যারা বেশি আয় করেন, তাদের জন্য এই ছাড়ের পরিমাণ কমতে থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, যে সকল ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৭৫,০০০ ডলারের (প্রায় ৮১ লক্ষ টাকা) বেশি এবং বিবাহিত দম্পতিদের আয় ১৫০,০০০ ডলারের (প্রায় ১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা) বেশি, তাদের জন্য এই সুবিধা সীমিত।

যাদের আয় ১৭৫,০০০ ডলারের (প্রায় ১ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা) বেশি এবং দম্পতিদের আয় ২৫০,০০০ ডলারের (প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা) বেশি, তারা এই ছাড়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কর ছাড় বয়স্ক আমেরিকানদের অর্ধেকেরও কম সংখ্যক মানুষের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে। এই ছাড়ের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা তুলনামূলকভাবে বেশি উপকৃত হবেন।

অন্যদিকে, যারা খুবই কম আয় করেন, অথবা যাদের আয়কর দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, তারা এই ছাড়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, যা তাদের অবসরকালীন আর্থিক নিরাপত্তা দিতে সহায়তা করে। এই ব্যবস্থার অধীনে, কর্মজীবনের সময়কালে কিছু পরিমাণ অর্থ জমা করা হয়, যা অবসর গ্রহণের পরে মাসিক ভাতার আকারে প্রদান করা হয়।

এই সুবিধাভোগীদের অনেকেই তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার ওপর কিছু পরিমাণ কর প্রদান করেন। যদিও নতুন কর ছাড়ের ফলে এই করের বোঝা কিছুটা কমবে, তবে অনেকের ক্ষেত্রেই তা সম্পূর্ণরূপে করমুক্ত হবে না।

এই প্যাকেজের কারণে সামাজিক নিরাপত্তা এবং মেডিকেয়ারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তহবিলগুলোর ওপরও প্রভাব পড়তে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে এই দুটি তহবিলের অর্থ দ্রুত ফুরিয়ে যেতে পারে।

এই ঘটনার পরে, অনেক প্রবীণ নাগরিকের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার ওপর আর কোনো কর দিতে হবে না।

কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্বচ্ছ বার্তা না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন।

এই ঘটনাটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিয়ে আসে। যেকোনো দেশের বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সরকারের উচিত বয়স্ক নাগরিকদের জন্য আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং একইসঙ্গে নীতিগুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া। এতে করে মানুষ উপকৃত হবে এবং বিভ্রান্তি কমবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *