বিধ্বংসী বন্যায় বিপর্যস্ত টেক্সাস: কমিশনারদের প্রথম জরুরি বৈঠক!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কের কাউন্টিতে গত সপ্তাহে ভয়াবহ বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ও একটি গ্রীষ্মকালীন শিবিরের প্রশিক্ষকও রয়েছেন।

ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর সেখানকার কমিশনাররা সোমবার তাদের প্রথম বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছেন। বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি ও উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হবে।

৪ঠা জুলাই রাতের প্রবল বর্ষণে গুয়াদালেপ নদী ফুলেফেঁপে ওঠে। এতে ঘরবাড়ি, গাড়ি, রাস্তাঘাট, গাছপালা সব ভেসে যায়।

ভয়াবহ এই বন্যায় শুধু কের কাউন্টিতেই ১০৬ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৬ জন শিশুও রয়েছে। এছাড়াও এখনো ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

বৈঠকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য একটি কেন্দ্র স্থাপন এবং ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের অতিরিক্ত বেতন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। কাউন্টি কমিশনারদের এই সভাটি স্থানীয় সময় সোমবার সকালে সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কের কাউন্টির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কাউন্টি জজ রব কেলি। এছাড়া এই কাউন্টির মূল প্রশাসনিক দায়িত্বে আরও চারজন কমিশনার রয়েছেন।

প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জন্য বাজেট, কর ও রাজস্ব সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের হাতেই।

এদিকে, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর উদ্ধার কাজে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (FEMA বা কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা) -এর ধীরগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মীরা জানিয়েছেন, ঘটনার কয়েকদিন পর তাদের মোতায়েন করা হয়েছিল।

সাধারণত এমন দুর্যোগের সময় দ্রুত সাহায্য পাঠানোর কথা থাকলেও, এক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি।

এছাড়াও, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম-এর স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষার কারণেও কিছু প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল বলে জানা গেছে।

FEMA-এর কর্মকর্তাদের মতে, এই বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের প্রক্রিয়াও ধীর হয়ে যায়।

অন্যদিকে, FEMA-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে। তাদের দাবি, দুর্যোগের পরপরই তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং সাহায্য পাঠিয়েছে।

কের কাউন্টির কাছে গুয়াদালেপ নদীর তীরে অবস্থিত ক্যাম্প মিস্টিক-এ ভয়াবহ বন্যায় নারী ও কিশোরীদের একটি খ্রিস্টান ক্যাম্পের ২৭ জন সদস্য নিহত হন। এছাড়াও, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ক্যাম্পটি এমন একটি স্থানে অবস্থিত ছিল, যা আগে থেকেই বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ছিল।

কেরভিলে শহরে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ফুল, খেলনা এবং নিহতদের ছবি রাখা হয়েছে। শিশুদের হাতে লেখা শোকবার্তাও সেখানে দেখা যায়।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *