রেকর্ড! ১ লক্ষ ২০ হাজার ডলার ছাড়াল বিটকয়েন, আকাশে দাম!

বিটকয়েনের দামে নতুন রেকর্ড, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার উপরে পৌঁছে গেল!

বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিটকয়েন, আবারও খবরের শিরোনামে। সোমবার প্রথমবারের মতো এর দাম এক লক্ষ ২০ হাজার মার্কিন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক কোটি ৩০ লক্ষ টাকার বেশি। ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহের প্রধান কারণ হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতিগত পরিবর্তন আসতে পারে, এমন একটা সম্ভাবনা।

সোমবার বিটকয়েন তার সর্বোচ্চ দর এক লক্ষ ২২ হাজার ৫৭১ ডলারে পৌঁছেছিল। পরে কিছুটা কমে, দিন শেষে এর দাম ছিল প্রায় এক লক্ষ ২১ হাজার ৯৫৩ ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ডিজিটাল মুদ্রার চাহিদা বাড়ছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন এই উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ট্রাম্প নিজেকে ‘ক্রিপ্টো প্রেসিডেন্ট’ বলেও অভিহিত করেছেন এবং নীতি নির্ধারকদের প্রতি এই শিল্পের অনুকূলে নিয়ম পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন।

শেয়ার বাজারের বিশ্লেষক টনি স্যাকামোর মনে করেন, বিটকয়েনের এই উল্লম্ফনের পেছনে রয়েছে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা এবং ট্রাম্পের সমর্থন। তিনি আরও যোগ করেন, গত কয়েকদিনে বিটকয়েনের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে সহজে এর পতন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বরং, খুব দ্রুতই এটি এক লক্ষ ২৫ হাজার ডলারের দিকে যেতে পারে।

বিটকয়েনের এই দাম বৃদ্ধির ফলে অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিও লাভবান হচ্ছে। এই বছর এখন পর্যন্ত বিটকয়েনের দাম ২৯ শতাংশ বেড়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি ইথেরিয়াম-এর দাম পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ, যা প্রায় ৩,০৫৯.৬০ ডলারে পৌঁছেছে।

একই সাথে, এক্সআরপি এবং সোলানা-র দামও প্রায় ৩ শতাংশ করে বেড়েছে। সবমিলিয়ে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের মোট মূল্য প্রায় ৩.৮১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

সিঙ্গাপুরের ওকেএক্স-এর প্রধান নির্বাহী গ্রেইসি লিন বলছেন, “আমরা দেখছি বিটকয়েন এখন শুধু খুচরা বিনিয়োগকারী বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছেই নয়, কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেও দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এশিয়া-ভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়ছে, যা এই বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক।”

তিনি আরও মনে করেন, এটি নিছক কোনো গুজব বা উন্মাদনা নয়, বরং বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থায় বিটকয়েনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান তৈরি হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘ক্রিপ্টো সপ্তাহ’ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে কংগ্রেসের সদস্যরা ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিল নিয়ে আলোচনা করবেন এবং সেগুলোর ওপর ভোট দেবেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিলটি হলো ‘জেনিয়াস অ্যাক্ট’, যা স্থিতিশীল কয়েনগুলির জন্য ফেডারেল নিয়ম তৈরি করবে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলো ডিজিটাল সম্পদ শিল্পের জন্য একটি সুস্পষ্ট এবং স্থিতিশীল কাঠামো তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বিবেচনা করে সচেতন থাকতে হবে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারের এই পরিবর্তনগুলি বিশ্ব অর্থনীতিতে ডিজিটাল মুদ্রার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *