ইউক্রেনে সামরিক অভিযান জোরদারে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত সময়সীমাকে কাজে লাগাতে চাইছে রাশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি পুনরায় ক্ষমতায় আসেন, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তবে এই প্রস্তাব কার্যকর করার আগে রাশিয়াকে প্রায় ৫০ দিনের একটি সময়সীমা দিচ্ছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কোনো সমাধানে পৌঁছানো না গেলে রাশিয়ার উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা ট্রাম্পের এই সময়সীমাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের ধারণা, এই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান আরও জোরদার করা যেতে পারে অথবা ট্রাম্পের নীতিতে পরিবর্তন আসারও সম্ভাবনা রয়েছে।
রাশিয়ার আইনপ্রণেতা আনাতোলি আকসাকভ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া কোনো নিষেধাজ্ঞাই ফলপ্রসূ হয়নি। বরং এর ফলে রাশিয়া আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে নতুন করে সাজিয়েছে।’
রাশিয়ার সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে ট্রাম্পের দেওয়া এই সময়সীমা তাদের জন্য একটি সুযোগ। এই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের মনোবল ভেঙে দেওয়া এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন দুর্বল করার চেষ্টা করা হবে।
যদিও রাশিয়া উদ্বিগ্ন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে, তবে তাদের সামরিক পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটবে। বিশেষ করে, আকাশ থেকে আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ‘প্যাট্রিয়ট’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করা হলে তা রাশিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ হবে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার অনেক রাজনীতিবিদ মনে করেন, ট্রাম্প শান্তির কথা বললেও পর্দার আড়ালে তিনি আসলে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন। রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা লিওনিদ কালাশনিকভ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্রাম্প ইউক্রেনকে ব্যবহার করে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করা হচ্ছে। অনেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের নীতির তুলনা করেছেন।
তাদের মতে, বাইডেন যেমন ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে আলোচনার টেবিলে আনতে চেয়েছিলেন, ট্রাম্পও তেমনটাই করছেন।
এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এবং এর আন্তর্জাতিক প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, বিশ্ববাজারে খাদ্য ও জ্বালানি তেলের দামের উপর এর প্রভাব নিয়ে অনেক দেশ উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন