মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর অরোরা শহরের এক দন্ত চিকিৎসক জেমস ক্রেগের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (গতকাল) থেকে এই চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।
অভিযোগ, তিনি শুধু স্ত্রী অ্যাঞ্জেলার জীবনই কেড়ে নেননি, বরং আরো চারজনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন এই মামলার প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তাও।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ৪৭ বছর বয়সী জেমস ক্রেগ তার স্ত্রী অ্যাঞ্জেলার প্রোটিন শেক-এ বিষ মিশিয়ে মারার চেষ্টা করেন। অ্যাঞ্জেলা ২০২৩ সালের ১৮ই মার্চ মারা যান। তাদের ছয় সন্তান ছিল।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে থেকেই ক্রেগ তার স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করতে শুরু করেন। তিনি অনলাইনে আর্সেনিক কেনার জন্য খোঁজ করেন এবং একটি ইমেইল আইডি তৈরি করেন।
এরপর তিনি অ্যামাজনে ‘কত গ্রাম আর্সেনিক একজন মানুষকে মারতে পারে’ এবং ‘শনাক্ত করা কঠিন এমন ৫টি বিষ’—এ ধরনের প্রশ্ন লিখে অনুসন্ধান করেন। অনুসন্ধানের পর তিনি আর্সেনিক কেনেন এবং তা তার বাড়িতে আসে।
এর কয়েক দিন পরেই অ্যাঞ্জেলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মাথা ঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা এবং শারীরিক দুর্বলতার কথা জানান।
ঘটনার দিন সকালে প্রোটিন শেক খাওয়ার পরেই এমনটা হয়েছিল বলে তিনি তার স্বামীকে জানান।
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, এর আগে ক্রেগ তার স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে অ্যাঞ্জেলা তাকে থামাতে না পারেন।
অ্যাঞ্জেলাকে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি করার আগে তিনি আবারও প্রোটিন শেক পান।
এছাড়াও, অ্যাঞ্জেলার মৃত্যুর পর জেমস ক্রেগ অন্য একজন নারীকে টেক্সাস থেকে কলোরাডোতে ডেকে পাঠান। তাদের মধ্যে ‘যৌন সম্পর্ক’ ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।
ওই নারী জানিয়েছেন, তিনি যদি আসল ঘটনা জানতেন, তাহলে ক্রেগের সঙ্গে থাকতেন না।
অ্যাঞ্জেলার মৃত্যুর কারণ হিসেবে সাইনাইড এবং টেট্রাহাইড্রোজোলাইনের বিষক্রিয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার সঙ্গে আর্সেনিকের উপস্থিতিও পাওয়া গেছে।
আদালতে বিচার শুরুর আগে, জেমস ক্রেগ কারাগারে বসে আরও চারজনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাদের মধ্যে ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরও দুইজন কয়েদি।
তিনি অপর এক কয়েদির প্রাক্তন স্ত্রীকে মিথ্যা সাক্ষী দিতে রাজি করানোরও চেষ্টা করেন।
জেমস ক্রেগের আইনজীবী এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জানা যায়, তিনি অ্যাঞ্জেলার আত্মহত্যার সম্ভাবনা প্রমাণ করতে চাইছেন।
এই ঘটনার শেষ পর্যন্ত কী হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।
তথ্য সূত্র: সিএনএন