ভিক্ষুক নিয়ে মন্তব্যের জের, কিউবার মন্ত্রীর পদত্যাগ!

কিউবার শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতো কাবরেরা পদত্যাগ করেছেন।

জানা গেছে, দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি দেশে ভিক্ষুকদের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন। এর পরেই তার এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয় এবং এর জেরেই তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।

সোমবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি কমিটির এক বৈঠকে মন্ত্রী বলেছিলেন, কিউবায় কোনো ভিক্ষুক নেই, বরং যারা ভিক্ষা করে, তারা আসলে ‘লোক দেখানো’। তার এমন মন্তব্যের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

অনেকে তার অপসারণের দাবি জানান। দেশের এই কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মন্ত্রীর এমন ‘সংবেদনহীন’ মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি সরকারও।

কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল এক টুইট বার্তায় নাম উল্লেখ না করে মন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের প্রতি এমন সংবেদনহীনতা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। বিপ্লব কখনোই কাউকে পিছনে ফেলবে না; এটাই আমাদের মূলমন্ত্র, আমাদের কর্তব্য।

সম্প্রতি কিউবার অর্থনীতিতে চরম মন্দা দেখা দিয়েছে।

এর ফলে সমাজে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, যা আগে খুব একটা দেখা যেত না। বৃদ্ধসহ অনেক মানুষকে এখন ভিক্ষা করতে বা ময়লার স্তূপ থেকে খাবার খুঁজে নিতে দেখা যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে মন্ত্রীর ওই মন্তব্য আগুনে ঘি ঢেলেছে।

বৈঠকে মন্ত্রী আরও বলেছিলেন, যারা উইন্ডশীল্ড পরিষ্কার করে টাকা রোজগার করে, তারা নাকি সেই টাকা দিয়ে ‘মদ পান’ করে। এমনকি যারা ময়লার স্তূপ থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, তাদেরও তিনি একহাত নেন।

তিনি বলেন, তারা নাকি কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য এই কাজ করে।

আগে, দারিদ্র্য থাকলেও কিউবায় ভিক্ষা বা গৃহহীনতা সেভাবে ছিল না।

যদিও এখন পেনশন কমে যাওয়ায় অনেক বয়স্ক মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। বর্তমানে একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির মাসিক পেনশন প্রায় ২,০০০ কিউবান পেসো, যা স্থানীয় বাজারে প্রায় ৫০০ টাকার সমান।

স্ব-নিযুক্ত নাগরিক এনরিকে গুইয়েন মনে করেন, মন্ত্রীর এই ধারণা ভুল এবং অনেকে পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছেন না।

তিনি সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

গুইয়েনের মতে, ‘বৃদ্ধ বয়সে তাদের কোনো পেনশন নেই। তারা একটা ডিমও কিনতে পারে না। এটাই এখন কিউবার বাস্তবতা।

এদিকে, সোমবার কিউবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১.১ শতাংশ কমেছে।

গত পাঁচ বছরে দেশটির জিডিপি ১১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *