গাজায় ইসরায়েলের পদক্ষেপ নিয়ে মার্কিনদের মধ্যে বাড়ছে তীব্র অসন্তোষ!

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মধ্যে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। সম্প্রতি, একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণের সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর হয়ে এসএসআরএস (SSRS) নামক একটি সংস্থা এই জনমত সমীক্ষাটি পরিচালনা করে।

সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, অক্টোবর ২০২৩-এর তুলনায় বর্তমানে অনেক কম সংখ্যক আমেরিকান মনে করেন যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ন্যায়সঙ্গত। ঐ সময় যেখানে ৫০ শতাংশ মানুষ এই মত পোষণ করতেন, সেখানে জুলাই ২০২৪-এর সমীক্ষায় মাত্র ২৩ শতাংশ মানুষ ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেছেন।

এছাড়া, ২৭ শতাংশ উত্তরদাতা এই কার্যক্রমকে আংশিকভাবে সমর্থন করেন, এবং ২২ শতাংশ মনে করেন যে এটি কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই মত পার্থক্যের বড় প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

অক্টোবরে যেখানে ৩৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সমর্থন করতেন, সেখানে বর্তমান সমীক্ষায় মাত্র ৭ শতাংশ সমর্থন করেছেন। একই সময়ে, রিপাবলিকানদের মধ্যে সমর্থন কিছুটা কমলেও, এখনো তারা ইসরায়েলের পক্ষে বেশি।

শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ডেমোক্র্যাট এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনেকেই মনে করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা প্রদান করছে।

বিশেষ করে ৩৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ৭২ শতাংশ মনে করেন যে, এই সাহায্য প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

বিভিন্ন বর্ণের মানুষের মধ্যেও ইসরায়েলের প্রতি ভিন্ন ধারণা দেখা যায়। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ ইসরায়েলের পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেন, যেখানে ২৯ শতাংশ মনে করেন এটি মোটেই ন্যায়সঙ্গত নয়।

এছাড়াও, আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়েও আমেরিকানদের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে। তাদের একটি বড় অংশ মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া উচিত নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বৈদেশিক নীতির প্রতি আমেরিকানদের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের দুর্বলতা এই পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি এখনো অনেকের কাছে বিতর্কিত।

সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, অধিকাংশ আমেরিকান মনে করেন ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ট্রাম্পের বিদেশনীতি এবং কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তার ওপর জনগণের অসন্তোষ এখনো প্রবল।

সিএনএন-এর এই জনমত সমীক্ষাটি ১০-১৩ জুলাই, ২০২৪-এর মধ্যে ১,০৫৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানদের মধ্যে পরিচালনা করা হয়েছিল। এতে +3.5 শতাংশ মার্জিন অফ এরর (Margin of error) ছিল।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *